তিন মাসের ব্যবধানে দুই প্রধানকে হারাল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। গত সেপ্টেম্বরে ইরানের রাজধানী তেহরানে হামাসের পলিটব্যুরোর প্রধান ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। এরপর গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) নিহত হয়েছেন নতুন কান্ডারি ইয়াহিয়া সিনওয়ার। পরপর দুজন প্রধান হত্যার ফলে হামাসের নতুন প্রধানকে নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনার তৈরি হয়েছে।
হামাসের দুজন কর্মকর্তার বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, অচিরেই প্রধান নেতার উত্তরসূরি বেছে নিতে আলোচনা শুরু হবে। বর্তমানে সিনওয়ারের ডেপুটি খলিল আল-হায়া এবং আরেকজন সিনিয়র নেতা এ তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন।
জানা গেছে, আল হায়া বর্তমানে কাতারে রয়েছেন। তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের নেতৃত্ব দিচেছন। গাজা নিয়ে তার গভীর জ্ঞান, সংযোগ ও বোঝাপড়া রয়েছে। গত আগস্ট থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর ডেপুটি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। হামাস নেতা সালেহ আল-আরৌরির উত্তরসূরি তিনি।
পরপর দুই কান্ডারিকে হত্যার পরও যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে নিজেদের শর্ত থেকে এক চুল বিচ্যুত হয়নি হামাস। গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার, শত্রুতার অবসান, মানবিক সাহায্য হস্তান্তর এবং যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠনের দাবি অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। তারা হামাসের আত্মসমর্পণের বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে।
ইসরায়েলের এমন শর্তের বিষয়ে হামাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমাদের পক্ষে আত্মসমর্পণ করা অসম্ভব। আমরা জনগণের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। আমরা আত্মসমর্পণ করব না। আমরা সিনওয়ারের মতো শেষ বুলেট ও শেষ যোদ্ধা থাকা পর্যন্ত লড়াই করে চলব।
এদিকে নতুন প্রধান হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার। তিনি হামাসের অবশিষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন। হামাসের ভবিষ্যৎ গঠনে তাকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
একাধিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বরাতে ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার হামাসের পরবর্তী প্রধান হতে পারেন।
মোহাম্মাদ সিনওয়ার ইয়াহিয়া সিনওয়ারের চেয়ে ১৩ বছরের ছোট। ১৯৭৫ সালে তিনি গাজার খান ইউনিসে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে আরব ইসরায়েল যুদ্ধে তাদের পরিবার বাস্তুচ্যুত হন। এরপর তারা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন।