গাজা ও লেবাননে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় ডজন ডজন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা ও লেবাননে তারা ১৭৫টি হামলা চালিয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা এবং লেবাননে আনুমানিক ১৭৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করেছে। এ সময়ে হিজবুল্লাহ এবং হামাসের ব্যবহৃত অস্ত্রের গুদাম, রকেট উৎক্ষেপণ সাইট এবং অন্যান্য অবকাঠামোতে হামলা চালানো হয়েছে।
গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলের উত্তরে হাইফা উপকূলে একটি সন্দেহজনক ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী বিভিন্ন হামলার কথা জানালেও উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় হামলার বিষয়টি উল্লেখ করেনি। দেশটির এ হামলায় অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অনেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে রয়েছেন। গাজা কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের এ হামলাকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার ফলে একের পর এক এলাকা কেঁপে উঠেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েক ডজন লোক ইসরায়েলের এ হামলায় আহত হয়েছেন। অনেকে এখনও পাথরের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এ হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ হাজার ৫১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া তাদের হামলায় এক লাখের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দেশটির এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নেয় যুদ্ধ। এরপর থেকে গাজার ওপর বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল,স্কুল, শরণার্থী শিবির , মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে