সাকিব আল হাসান নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। প্রায় দেড় দশক ধরে জাতীয় দলের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি। ব্যাট ও বল হাতে সমান পারদর্শিতা দেখিয়ে সাকিব দলে অপরিহার্য এক সম্পদ হয়ে ওঠেন। ব্যাটার হিসেবে তিনি দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য তারকা, আর বোলিংয়ে সাকিব বাংলাদেশের কার্যকরী অস্ত্র।
সাকিবের গুরুত্ব শুধু ভক্তদের প্রশংসা নয়, বাস্তবেও তার পারফরম্যান্স টিম বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ যত সাফল্য পেয়েছে, তার বড় একটি অংশের স্থপতি সাকিব। তিন ফরম্যাটে ৪৫ বার ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্রিকেটারদেরও একজন। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (২৪৭ উইকেট) এবং ব্যাট হাতে ৪৬০৯ রান সংগ্রহ করা সাকিবের ওপরে আছেন কেবল মুশফিকুর রহিম (৫৯৬১) ও তামিম ইকবাল (৫১৩৪)। এ ছাড়া টেস্টে সবচেয়ে বেশি ছয়বার ম্যাচসেরার সম্মানও তার ঝুলিতে।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলেই দীর্ঘ ফরম্যাট থেকে বিদায় নেওয়ার সাকিবের ইচ্ছে আপাতত বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নিরাপত্তা শঙ্কা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে তাকে দেশে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ফলে এই টেস্টে তার বিদায় সম্ভব হচ্ছে না।
ঢাকা টেস্টে সাকিবের বিদায় নিয়ে ভক্তদের অনেক প্রত্যাশা ছিল, আর জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও তাকে একটি স্মরণীয় বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু আজ বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সংবাদ সম্মেলনে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাকিবকে শেষ টেস্ট খেলতে না দেখতে পেয়ে তারও মন খারাপ।
শান্ত বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল, সাকিব ভাইকে আমরা একটা চমৎকার বিদায় দিতে চাইছিলাম। এটা না হওয়াটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রতিটি খেলোয়াড়ই মনে করে বিষয়টা পেন্ডিং থেকে গেল। এটা হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু হয়নি। আমরা সবাই জানি কেন হয়নি। টেস্টের আগের দিন এসব নিয়ে বেশি কথা বলতে চাই না। আমি চাই খেলায় মনোযোগ থাকুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সাকিব ভাই এখান থেকে বিদায় নিতে পারতেন, খুব ভালো হতো। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি, আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়ও সেটা অনুভব করে। সাকিব ভাইয়ের ফেয়ারওয়েলটা আপাতত তোলা থাকল।’
বর্তমানে শান্ত ও তার দল ঢাকার এই টেস্ট ম্যাচে মনোযোগ দিচ্ছেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেতে মাঠে নামতে প্রস্তুত।