সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ, পরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগরে যাওয়া ট্রলার, নৌকাকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টির লক্ষ্যস্থল বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, লঘুচাপটি মঙ্গলবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাব বুধবার থেকে অনুভূত হতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এর প্রভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা আছে।
তিনি বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পরই এর গতিপ্রকৃতি বোঝা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত যতটুকু ধারণা করা হচ্ছে, তাতে এর সম্ভাব্য অতিক্রমস্থল হতে পারে ভারতের ওডিশা বা পশ্চিমবঙ্গের উপকূল। তবে এখনই নিশ্চিত করে বলাটা দুরূহ যে এটি বাংলাদেশের দিকেও আসবে না। মঙ্গলবার নিম্নচাপ সৃষ্টির পরই আসলে এ বিষয়ে একটা ধারণা করা যেতে পারে।
লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এর নাম হতে পারে ‘ডানা’। নামটি প্রস্তাব করেছে কাতার। আরবিতে এর অর্থ অতি সুন্দর ও মূল্যবান মুক্তা। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোনসংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। নিম্নচাপটি শক্তিশালী হয়ে বুধবার পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ তৈরি হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
এর আগে সর্বশেষ গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রিমাল বাংলাদেশ উপকূল ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে। ওই ঝড়ের তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হয়।
একটি নিম্নচাপের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কার কথা মাসের শুরুতে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলেছিল আবহাওয়া অফিস। চলতি অক্টোবর মাসে দেশে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকের তুলনায় খানিকটা বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টির পর গত দুদিন বৃষ্টি অনেকটাই কমে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতিদিন ৫১টি স্টেশনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেখা গেছে, মাত্র দুটি স্টেশনে বৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে তেঁতুলিয়ায়, ১ মিলিমিটার। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ফেনীতে, ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ও বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগের দুএক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মঙ্গলবার সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বুধবার সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।