29 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

শেখ হাসিনার প্রশ্ন: মুক্তিযোদ্ধারা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিল?

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকের অবরুদ্ধ বাংলাদেশ কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই, শোক পালনের অধিকার নেই। পঁচাত্তরের পরেও কুচক্রিমহল একই পরিবেশ তৈরি করেছিল। আজ প্রশ্ন জাগে, মুক্তিযোদ্ধারা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিল?’

আগামীকাল রবিবার (৩ নভেম্বর) জেলহত্যা দিবস। এ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বিবৃতিতে এই প্রশ্ন উপস্থাপন করেন শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে বিবৃতিটি আপলোড করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের জাতীয় জীবনে এক শোকাবহ দিন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় ৩ নভেম্বর। আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাত্র তিন মাসের মধ্যে এই দিনে শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে তার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

আরো পড়ুন  ‘পোশাক কারখানার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক’

বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমি জাতির পক্ষ থেকে জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

তিনি আরও বলেন, কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড ছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতা। এ ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও দেশবিরোধী চক্র বাংলার মাটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিশীল রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। ’৭৫-এর সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতারা বিভিন্ন সময়ে দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে।

আরো পড়ুন  পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী

শেখ হাসিনা বলেন, আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেও রক্ষা করতে পারেনি। হত্যাকারীদের বিচারের বদলে দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে এবং রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বরাবরই দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করতে এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে বারবার হামলা করেছে। কিন্তু দিনশেষে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি এবং ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে।

আরো পড়ুন  ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করতে যাচ্ছিলেন, পথেই তিনজনকে পিষে মারল ট্রাক!

তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যে কোনও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকবে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। জাতীয় চার নেতার জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এটাই উৎকৃষ্ট পন্থা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হলো, সময়ের পরিক্রমায় একদিন সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের চেতনা চির জাগরূক থাকবে এবং জাতীয় চার নেতার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। শহীদ জাতীয় চার নেতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

সর্বশেষ সংবাদ