বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের বুকের ওপর চেপে থাকা দানব সরে গেছে। কিন্তু বিপদ এখনো শেষ হয়নি, নতুন করে বিপদ আসার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই আমাদের সজাগ ও সচেতন হতে হবে।
মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির ওপর সবসময় আঘাত এসেছে। বহু চেষ্টা করেও কেউ বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি। বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে নারীরা। যেকোনো ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের নায়ক সাধারণ সিপাহী ও জনতা। ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে নতুন করে বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সেদিন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামনে না আসলে বাংলাদেশে যে কী হতো- এ কথা বলা যায় না। হয়তো এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তিনি নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বাকশালের পাশাপাশি রক্ষী বাহিনীও গঠন করেছিল। এই রক্ষীবাহিনী কত মানুষকে যে হত্যা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। সে সময় জাসদের নেতাকর্মীদেরকে হত্যা করেছিল এই রক্ষীবাহিনী।
মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি বহুদলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। গণমাধ্যমকে মুক্ত করে দেন। গার্মেন্টস শিল্প ও বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে রেমিট্যান্স আনার যে প্রবণতা, এর সূচনা করেছিলেন তিনি। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ওপর থেকে এসে ক্ষমতায় চেপে বসেননি। তিনি জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন। এ সময় জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার বলে দাবি করেন ফখরুল।
বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর গত ১৫ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মী ছাড়াও জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছিল। এরা দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। আমাদের ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ ৬শ’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করেছে। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার দৃঢ়তার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আমরা সরাতে পেরেছি। এ জন্য মহান রবের নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান ‘৭১ সালে পালিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য বাসায় বসে ছিলেন। সেটি আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দিন আহমেদের মেয়ে তার বইয়ে লিখেছেন।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনাসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।