গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে চুক্তির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরইমধ্যে বিষয়টি মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদেরও জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।
শীর্ষ এক হামাস নেতার বরাতে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
সোমবার (৬ মে) যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে,
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং মিশরীয় গোয়েন্দামন্ত্রী আব্বাস কামেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং তাদেরকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতির ব্যাপারে অবহিত করেছেন।
হামাসের এক কর্মকর্তা বলেন, বল এখন ইসরাইলের কোর্টে। প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির বিষয়টি এখন তাদের ওপরই নির্ভর করছে। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
গাজায় গত প্রায় সাত মাস ধরে সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। সারা বিশ্ব আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানালেও তাতে কর্ণপাত করছে না দেশটির সরকার। সংঘাতের প্রথম দিকে গত বছরের নভেম্বর মাসে মাত্র সাতদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। সেই সময় যুদ্ধবিরতির সুযোগে উভয় পক্ষ বন্দি বিনিময়ও করেছিল।
এরপর ফের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হলেও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আপত্তিতে তাতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। চলতি সপ্তাহে মিশরের রাজধানী কায়রোতে যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে অবশিষ্ট ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিশ্চিতে জোর আলোচনা শুরু হয়।
গত শনিবার (৪ মে) হামাস বলেছে, আমাদের প্রতিনিধি দল সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি বিষয়ে আশাবাদী। আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য চুক্তি করতে আগ্রহী। বিবিসি। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, হামাস আলোচনার টেবিলেই চুক্তি করতে চায় যেন সবার সামনে সেই চুক্তিটি মূল্যায়ন পায়। যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থায়ী বা অস্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে মূল সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
বিবৃতিতে হামাস আরও বলে, যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে তা গাজায় হামলা বন্ধের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু ইসরায়েল কোনো চুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হচ্ছে না। আমরা আশাবাদী যদি চুক্তি হয়, সেই ক্ষেত্রে জিম্মি মুক্তিসহ প্রায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতিসহ ফিলিস্তিনি বন্দিরাও মুক্তি পাবে।
তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার বলতে থাকেন, ইসরাইল হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবের সাথে একমত নয় এবং দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে নতুন করে সামরিক অভিযান চালানো হবে। সেই কথা মতো সোমবার (৬ মে) রাফায় সীমিত অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্র রাফাহ শহরে নতুন আক্রমণের বিপক্ষে। কারণ আনুমানিক ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ ভূখণ্ডের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। যা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে এসেছিল। এই হামলা ফিলিস্তিনি হতাহতের সংখ্যা বাড়াবে।