বিয়ের পরই স্বামীকে নিয়ে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রী। পরিবারের সদস্যরাও ভেবেছিলেন, আলাদা সংসারে হয়তো সুখে-শান্তিতে থাকবে স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু বন্ধ ঘরের ভেতরে যে কী চলত, তা টের পাননি কেউ। মূলত স্ত্রীর হাতে চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ওই স্বামী।
তার হাত-পা বেঁধে, শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দিয়েছেন স্ত্রী। এমনকী, সিগারেট দিয়ে স্বামীর যৌনাঙ্গে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। শেষমেষ পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর এরপরই স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে। গত সোমবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বামীকে বেঁধে সিগারেট দিয়ে গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে নির্যাতন করার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের বিজনোর পুলিশ ২৮ বছর বয়সী এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এমনকি তিনি তার স্বামীকে শ্বাসরোধ করারও চেষ্টা করেছিলেন বলে গত রোববার জানিয়েছে পুলিশ।
গোটা ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে। এই ভিডিও ফুটেজে তাকে তার স্বামীকে নির্যাতন করতে এবং তার গোপনাঙ্গে আঘাত করতে দেখা গেছে। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গ্রেপ্তারকৃত ওই স্ত্রীর নাম মেহের জাহান। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার নির্যাতিত ওই ব্যক্তির কাছ থেকে সেওহারা জেলা পুলিশ একটি অভিযোগ পায়। অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ রোববার অভিযুক্ত মেহের জাহানকে গ্রেপ্তার করে।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী ওই স্বামীর নাম মান্নান জাইদি। তার অভিযোগ, গত ২৯ এপ্রিল স্ত্রী মেহের জাহান দুধে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তাকে পান করতে বাধ্য করেন। পরে তার স্ত্রী তার হাত-পা বেঁধে, সিগারেট দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেয় এবং গোপনাঙ্গ কাটার চেষ্টা করে বলেও জানান তিনি।
টাইমস নাউ বলছে, গত বছরের ১৭ নভেম্বর সেওহারা থানা এলাকার সাফিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা মেহেরকে বিয়ে করেন মান্নান। বিয়ের পর সেওহারার মহল্লা হাটা শহরে স্ত্রীর কথা মতো পরিবার থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিয়ের মাত্র কয়েকদিন পর তিনি দেখতে পান যে তার স্ত্রী মদ্যপ এবং ধূমপান করেন। তিনি তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন বলেও দাবি করেন। প্রতিবাদ করলে মেহের জাহান তাকে হত্যার হুমকি দেন।
স্বামীর অভিযোগ, তার স্ত্রীও তাকে মিথ্যা অভিযোগ এনে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন। আর এরপর স্বামী পুলিশের কাছে গিয়ে প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার পর পুলিশ তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে।
এসপি ইস্ট ধরমপাল সিং বলেছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত নারীর বিরুদ্ধে প্রাসঙ্গিক ধারায় রিপোর্ট নথিভুক্ত করেছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এই বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চলছে।