27 C
Dhaka
Wednesday, July 3, 2024

মুমূর্ষু ৬৯৩ রোগীকে স্বেচ্ছায় বিলিয়েছেন নিজের ১১০ লিটার ‘লাল ভালোবাসা’, অতঃপর…

গত ৪৯ বছর স্বেচ্ছায় মুমূর্ষু রোগীদের রক্ত দান করে মানবতার সেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ৬৮ বছর বয়সী হেনরি বিকফ। ১৯৭৫ সাল থেকে এই লাল ভালোবাসা বিলিয়ে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছেন এই মার্কিন নাগরিক। নিউইয়র্ক ব্লাড সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, তার রক্তে এখন পর্যন্ত ​৬৯৩ মুমূর্ষু রোগীর জীবন বেঁচে গেছে।

তার দেয়া রক্তের পরিমাণ ৮৭০টি সিঙ্গেল-সার্ভ আইসক্রিম স্কুপ, ৩১০টি কোক ক্যানের সমান। এ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক পোস্টকে তিনি বলেস, ‘আমি কিছু সময়ের জন্য এটি করেছি, এটি এমন কিছু যা আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধভাবে করেছি, এবং এটির জন্য কিছুটা স্বীকৃতি পাওয়া সত্যিই চমৎকার।’ খরব এনডিটিভির।

পেশায় চোখের চিকিৎসক এই মার্কিন নাগরিক প্রথম রক্ত দান করেছিলেন যখন তিনি কলেজছাত্র ছিলেন। ‘অনেকেই এমন এমন মহৎ কাজ করেন। এটা ছিল সবার জন্য ভালো কিছু করার জন্য একটি ভালো উপায়। তিনি তার প্রথম অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘প্রথমবার রক্ত দেয়ার পর ভীষণ মাথা ঘুরিয়েছিল, কারণ তখন আমার হয়ত পানিশূন্যতা ছিল। এরপর কিছু তরল খাওয়া ও বিশ্রাম নেয়ার পর সব ঠিক হয়ে যায়। তবে প্রথমবারের সেই কঠিন অভিজ্ঞতা তাকে বরং শক্তি জুগিয়েছে, যোগ করেন এই চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ।

আরো পড়ুন  হেরে যাচ্ছে ইসরায়েল, বিস্ফোরক মন্তব্য মোসাদের সাবেক উপপ্রধানের

‘এটি শুনতে হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু আমি এটাকে মানব কল্যাণে মূল শক্তি বলতে পারি। এটি এমন কিছু যা আমার পেশাগত কাজের পাশাপাশি করা যায় এবং এতে খুব বেশি সময় লাগে না। আমি এটাকে মাল্টিটাস্কিং বলে মনে করি। অন্য সব কাজের ফাঁকে আমার শরীরে রক্তের নতুন কোষ তৈরির প্রক্রিয়া চলতে থাকে। আর আমি প্রতি দুই মাস অন্তর রক্ত কেন্দ্রে গিয়ে রক্তদান করতে পারি।’

আরো পড়ুন  ক্যাসিনোয় ৪৭ কোটি টাকা জিতে ‘খুশিতে হার্ট অ্যাটাক’!

বিকফের রক্তের গ্রুপ বি-নেগেটিভ যার চাহিদা বেশি। গত দশকে তিনি প্রতি ৫৬ দিন অন্তর রক্তদান করেছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বিরতির সময়কাল বাড়াতে হচ্ছে থাকে।

নিউইয়র্ক ব্লাড সেন্টারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেয়া সেফারেলি বলেন, দাতাদের মাত্র ১.২ শতাংশ সারাজীবনে ২০ গ্যালনের কম বেশি রক্ত দান করে থাকেন। গড়পড়তা ব্যক্তি তাদের জীবনে কয়েকবার এমনভাবে মানবকল্যাণে কাজ করেন। এটি এমন একটি রক্তের গ্রুপ যার যোগান খুবই কম। কারণ জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ এই রক্তের গ্রুপধারী। এ বি নেগেটিভ শুধুমাত্র বি নেগেটিভ বা ও নেগেটিভ গ্রহণ করতে পারেন।’

আরো পড়ুন  গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, নিহত আরও অর্ধশতাধিক

বিকফের স্ত্রী মাঝে মাঝে রক্তদান করেন। তবে তার মেয়ে বিরল রক্তরোগের কারণে তা করতে পারছেন না। আর তার ছেলে রক্তদানে আগ্রহী নন। ‘এটি সত্যিই এমন কিছু যা বাবার জন্য গর্বিতবোধ করি। এক প্রতিক্রিয়ার এমনটি জানিয়েছেন তার ৩৬ বছর বয়সী মেয়ে। মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচিয়ে তোলার কাজে তাকে দেখে উৎসাহিত হয়েছেন অনেকে।

সর্বশেষ সংবাদ