27 C
Dhaka
Wednesday, July 3, 2024

সব কিছু ধ্বংসের পর আল্লাহ কী করবেন?

পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংসের পর মহান আল্লাহতায়ালা কী করবেন? কৌতূহল উদ্দীপক এমন প্রশ্ন মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য।

আল্লাহ্তায়ালা সুরা আর-রহমানের ২৬ ও ২৭ নম্বর আয়াতে বলেন, হে রাসুল, আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালনকর্তা ব্যতিত পৃথিবী পৃষ্ঠে যা কিছু রয়েছে সবই ধ্বংসশীল। এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়- একদিন আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।

অর্থাৎ মৃত্যু হবে মানুষ ও জিন জাতির। যাদের নিজ ইবাদতের জন্য তৈরি করেছেন তাদের মৃত্যুর পর আল্লাহতায়ালা কী করবেন? অন্যকোনো জাতিকে কী পৃথিবীতে পাঠাবেন।

যারা কোরআনের ব্যাখ্যা করেন, সেই মুফাসসিরে কিরামদের কেউ কেউ মনে করেন, সুরা আর রহমানের ওই আয়াত দ্বারা কেবল পৃথিবীর সবকিছুকে বোঝানো হয়েছে, আসমানের কোনো সৃষ্টিকে বোঝানো হয়নি।

তবে রাইসুল মুফাসসিরিন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, যখন এই আয়াত নাজিল হয়, তখন ফেরশতারা বলতে লাগলেন- পৃথিবীবাসীর ধ্বংস অনিবার্য। তখন সুরা কাসাসের একটি আয়াত নাজিল হয়।

আরো পড়ুন  বিষ দিয়ে ১০ লাখ কাক মারার প্রস্তুতি, কারণ জানলে অবাক হবেন

যেখানে আল্লাহতায়ালা বলেন, একমাত্র আল্লাহর সত্তা ছাড়া সবকিছুই ধ্বংসশীল। বিধান কেবল তারই হবে এবং তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। এই আয়াতটি অবতীর্ণের পর ফেরেশতারা নিশ্চিত হলেন, শুধু মানুষের নয়, তাদেরও ধ্বংসও অনিবার্য।

প্রখ্যাত তাবেয়ি হজরত মুকাতিল ইবনে হিব্বান রহ. বলেন, ধ্বংসশীল হওয়ার দিক থেকে আসমান এবং জমিন, উভয় জগতের সৃষ্টিজীবই সমান। মৃত্যুর মাধ্যমে উভয় জগতের অধিবাসীরাই একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এই ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায় ঘটবে কেয়ামতের মাধ্যমে।

কেয়ামতের বিষয়ে আল্লাহতায়ালা সুরা নহলের ৭৭ নম্বর আয়াতে বলেন, কেয়ামতের বিষয়টি তো এমন, যেমন চোখের পলক অথবা তার চেয়ে অল্প সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিশ্চিয়ই আল্লাহ সব কিছুর ওপর শক্তিমান।

আরো পড়ুন  ইসরাইলের নতুন আতঙ্ক হুতির ‘ফিলিস্তিন’ ক্ষেপণাস্ত্র!

এই কেয়ামতের মাধ্যমেই আল্লাহ আসমান-জমিনের সবকিছু ধ্বংস করে দিবেন এবং সবাইকে পুনরুত্থিত করবেন, হিসাব নিবেন কৃতকর্মের। যারা সৎকর্ম করেছেন, তারা জান্নাতে আর যারা রবের সীমালঙ্ঘন করেছেন তারা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবেন।

সবকিছু ধ্বংসের পর মহান আল্লাহতায়ালা নতুন করে আর কোনো সৃষ্টিজীব সৃষ্টি করবেন কি না, এ বিষয়ে মুহাক্কিক আলেমরা বলেন, এটা পুরোপুরি গায়েবি বিষয়। এটি জানার একমাত্র মাধ্যম আল কোরআন ও হাদিস। আল কোরআনে নতুন মাখলুক সৃষ্টির বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। তবে, হাদিসে এর বর্ণনা রয়েছে।

সুরা ক্বফের ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করবে—তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? তখন সে বলবে, আরও আছে কী?

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হজরত আনাস রা. বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, অনবরত জাহান্নামীদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তবুও জাহান্নাম বলবে, আরও আছে কী? অবশেষে আল্লাহ সেখানে আপন পা মোবারক স্থাপন করবেন। তখন জাহান্নামের একটি অংশ অপর একটি অংশের সঙ্গে মিলে গিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। বলবে, হে আল্লাহ, আপনার ইজ্জতের কসম, আমি পরিপূর্ণ হয়ে গেছি। অন্যদিকে, জান্নাতের শূন্যস্থান পূরণে আল্লাহতায়ালা নতুন সৃষ্টিজীব সৃষ্টি করবেন এবং তাদের জান্নাতে বসবাস করতে দিবে। (সহিহ মুসলিম-২৮৪৮)

আরো পড়ুন  ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সব আসনের ফল ঘোষণা: কোন দল কয়টিতে জয় পেল

এই হাদিসের ব্যাখ্যায় আলেমরা বলেন, এর মাধ্যমে আল্লাহর আজাব সীমিত এবং রহমত অশেষ, তা প্রমাণ হয়। কারণ, জাহান্নাম পূর্ণ করতে তিনি নিজের পা মোবারক প্রতিস্থাপন করবেন, কিন্তু জাহান্নাম চাওয়ার পরেও সেখানে নতুন কোনো বান্দাকে ফেলবেন না। অন্যদিকে জান্নাতের ফাঁকা স্থান পূর্ণ করতে তিনি সৃষ্টি করবেন নতুন সৃষ্টিজীব।

সর্বশেষ সংবাদ