22 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় নিহত অন্তত ৬০, নিখোঁজ আরও বহু

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই বন্যায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ।

শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৬০ জন মারা গেছেন এবং আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে তালেবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিবিসি বলছে, দেশটি উত্তরাঞ্চলীয় বাঘলান প্রদেশের পাঁচটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পর আরও কয়েক ডজন লোক নিখোঁজ রয়েছেন। শুক্রবার রাতে এই অঞ্চলে আরও দুটি ঝড়ের পূর্বাভাসের দেওয়া হয়েছিল। এতে করে সেখানে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন  লিবিয়া থেকে ইতালি : জীবিত উদ্ধার ৩০ বাংলাদেশিসহ ৫১, নিহত ১০

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যা দেশটির এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

মূলত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে বন্যায় দেশটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বিবিসিকে বলেছেন, যারা মারা গেছেন তারা বাঘলান প্রদেশের বোরকা জেলার মানুষ। সেখানে দুই শতাধিক মানুষ তাদের ঘরের মধ্যে আটকা পড়েছেন।

আফগান সরকারের এই কর্মকর্তা এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টারগুলোকে বাঘলানে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকাটি রাজধানী কাবুলের সরাসরি উত্তরে অবস্থিত। তবে রাতে দৃষ্টিশক্তির ঘাটতির কারণে ‘অপারেশন সফল নাও হতে পারে’ বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন  ফিলিস্তিনিদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করছে মাইক্রোসফট!

এদিকে, স্থানীয় কর্মকর্তা হেদায়তুল্লাহ হামদর্দ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীসহ জরুরি কর্মীরা ‘কাদা ও ধ্বংসস্তূপের নিচে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করছেন’। এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ঘরবাড়ি হারিয়েছে এমন কিছু পরিবারকে তাঁবু, কম্বল এবং খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।

এছাড়া বন্যার জেরে কাবুলের সাথে উত্তর আফগানিস্তানের সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও বন্ধ রয়েছে।

গত মাসে আফগানিস্তানের পশ্চিমে বন্যায় কয়েক ডজন লোক মারা যাওয়ার পরে এবার উত্তরাঞ্চলে বন্যার এই ঘটনা ঘটল। এর ফলে হাজার হাজার মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি, তিনটি মসজিদ এবং চারটি স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরো পড়ুন  ট্রাম্পের এই আমল ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও খারাপ হতে পারে

মূলত আকস্মিক বন্যা যখন ঘটে তখন এত বেশি বৃষ্টিপাত হয় যে, স্বাভাবিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা সেটি মোকাবিলা করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ঠান্ডা মাটির জন্য বৃষ্টিপাত শোষণ করা আরও কঠিন করে তুলেছে।

মূলত আফগানিস্তানে প্রতি বছর মুষলধারে বৃষ্টি এবং বন্যায় মানুষ মারা যায়। এছাড়া বিচ্ছিন্ন গ্রামীণ এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ সংবাদ