সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তির প্রায় এক মাস পর বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ কক্সবাজার উপকূলে পৌঁছেছে। সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় কুতুবদিয়ায় নোঙর করে রাখা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজটির ২৩ নাবিকের মঙ্গলবার (১৪ মে) ঘরে ফেরার কথা রয়েছে।
এ দিকে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের প্রত্যেকের পরিবারে চলছে শেষ কয়েক ঘণ্টার আনন্দময় অপেক্ষা। কারো প্রিয়তমা স্ত্রী বন্দরে যাবেন স্বামীকে নিয়ে আসতে। কারো মা অপেক্ষায় আছেন প্রাণপ্রিয় সন্তানকে বুকে ফিরে পেতে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
জানা গেছে, উন্মুক্ত জলসীমায় ঘণ্টায় সাড়ে ১১ নটিক্যাল মাইল গতিতে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় নোঙর করে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমবার সন্ধ্যায় আগে কুতুবদিয়ায় নোঙর করে এমভি আব্দুল্লাহ। এখান থেকেই দুবাইয়ের হারমিয়া বন্দর থেকে আনা চুনামাটি লাইটারেজ জাহাজে খালাসের পর চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটে নিয়ে আসা হবে নাবিকদের।
এ দিকে, রাতেই জাহাজের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন নতুন ২৩ নাবিক।
এর আগে শনিবার (১১ মে) দুপুরে এমভি আবদুল্লাহ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
তিনি জানান, এমভি আবদুল্লাহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করার পর সোমবারই নতুন ২৩ নাবিক জাহাজটিতে উঠেছেন। তারা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে যোগদানের পর জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নাবিকেরা দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর মঙ্গলবার এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের জেটিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
মিজানুল ইসলাম আরও জানান, ৫৬ হাজার টন চুনাপাথরবোঝাই করে গত ২৯ এপ্রিল জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর ত্যাগ করে। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) এটি বঙ্গোপসাগরের জলসীমায় পৌঁছে। সোমবার সন্ধ্যায় কুতুবদিয়ায় কুতুবদিয়ায় নোঙর করে রাখা হয়েছে জাহাজটি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই আসার সময় ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি। বড় অংকের মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিন পর ১৩ এপ্রিল তাদের উদ্ধার করা হয়। এরপর দুবাই যায় জাহাজে থাকা কয়লা খালাসের জন্য। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গত ২১ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি।
এরপর ৩০ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ।