বগুড়ায় বন্ধুকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা মামলার মূল আসামি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বেলাইলের হাজীর মিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম সবুজ সওদাগর। তিনি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি। তার নামে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া সদরের শহরদীঘি এলাকায় জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি সবুজ সওদাগর তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে বন্ধু আলী হাসানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। নিহত আলী হাসান বগুড়া শহরের মালগ্রাম পশ্চিমপাড়ার জিন্নাহ মিঞার ছেলে। তিনি ট্রাকচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। আলী হাসান বগুড়ার ফাঁপোর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মমিনুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। অভিযুক্ত সবুজ সওদাগরও হত্যা মামলার আসামি।
ওই ঘটনায় নিহতের বাবা জিন্নাহ মিয়া বাদী হয়ে সবুজ সওদাগরকে প্রধান করে চারজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সবুজের মা সিল্কী বেগম, সবুজের ভাই সম্রাট সওদাগর ও তার স্ত্রী লিপি বেগম।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শরাফত ইসলাম বলেন, আলী হাসান এবং সবুজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। এ কারণে একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। এক বছর আগে আলী হাসান হত্যা মামলায় জেল হাজতে থাকাকালে সবুজের সঙ্গে হাসানের স্ত্রী মিতু বেগম পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা বিয়ে করেন। আলী হাসান জামিনে বের হয়ে ঘটনাটি জানতে পেরে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, পরে বিষয়টি মীমাংসা করে আবারও আগের মতো চলাফেরা করছিলেন তারা। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সবুজ তার শহরদীঘির বাড়িতে আলী হাসানকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানেই আলী হাসানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ঘরে আটকে রাখে। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে হাসানকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা শরাফত ইসলাম বলেন, আলী হাসানকে হত্যার পর থেকেই সবুজ সওদাগর পলাতক ছিলেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।