জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মো. ছালাহ উদ্দিনকে নামাজ পড়ানোর অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মসজিদে এশার নামাজের পর ছাত্রী ঘুমানোর আলোচিত ঘটনায় তাকে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে শুক্রবার (৩১ মে) তিনি জুমার নামাজ পড়ান।
শুক্রবার (৩১ মে) তিনি জুমার নামাজে ইমামতি করেছেন বলে সময় টিভিকে নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. আইনুল ইসলাম।
তিনি জানান, যেহেতু আজ জুমার দিন ছিল তাই মো. ছালাহ উদ্দিনকে জুমা পড়াতে দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি ও আরেকজন ইমাম নামাজ পড়াবেন। একজন এক ওয়াক্ত পড়ালে অন্যজন পরের ওয়াক্ত পড়াবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলবে।
গত ১৮ মে রাতে এশার নামাজ আদায় শেষে এক ছাত্রী জবির কেন্দ্রীয় মসজিদের মেয়েদের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে মসজিদের পাহারাদার তালা লাগাতে গেলে ওই মেয়েকে দেখতে পান। এ সময় মসজিদের ওই পাহারাদারের স্ত্রী তাকে বের করে নিয়ে আসেন। তবে ইমাম বা পাহারাদার কেউই ভেতরে প্রবেশ করেননি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ইমামকে দায়িত্বে অবহেলার কারণ দেখিয়ে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এরপর এই ঘটনাকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর সমালোচনা শুরু করেন। এর প্রতিবাদে ২৯ ও ৩০ এপ্রিল জোহর নামাজের পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিলও করেন। যদিও প্রশাসনের বাধার সম্মুখীন হয়েছিল মিছিল দুটি।
এর আগে শুক্রবার (৩১ মে ২০২৪) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মধ্যরাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে ছাত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে তাকে ইমামতি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে কোনো কোনো গণমাধ্যম খতিবকে অপসারণ করা হয়েছে বা অব্যাহতি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে, যা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গত ১৫ মে রাত ১১টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থীর অবস্থানের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মসজিদের ইমামসহ (খতিব) সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়ে তদন্তপূর্বক একটি নিরপেক্ষ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খালেদ সাইফুল্লাহকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।