গত সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিনিদের দেওয়া প্রস্তাবের জবাব দিয়েছে হামাস। গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছে পাঠানো জবাবে সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি কিছু শর্ত দিয়েছে।
তারা বলেছে— স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কবে হবে সেই তারিখ আগেই নির্ধারণ করে দিতে হবে। অর্থাৎ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হবে এরপর কথিত আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো হবেন এমন কোনো কিছু তারা মানবে না।
তারা আরও শর্ত দিয়েছে— গাজা থেকে ইসরায়েলের সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এমনকি গাজা ও মিসরের সীমান্তবর্তী রাফা থেকেও ইসরায়েলি সেনাদের সরে যেতে হবে।
হামাস আরেকটি প্রধান শর্ত দিয়েছে সেটি হলো— যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজাকে পুনর্গঠিত করে দিতে হবে এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে।
দখলদার ইসরায়েলের হামলায় গাজার বেশিরভাগ বাড়িঘর ভেড়ে গেছে। এখন সেগুলোতে মানুষের বসবাস করা সম্ভব নয়।
এছাড়া ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারেও শর্ত দিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, ইসরায়েলের কারাগারে যেসব ‘হাইপ্রোফাইল’ বন্দি রয়েছে তাদের মুক্তি দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে ইসরায়েল কোনো আপত্তি করতে পারবে না। যার অর্থ হামাস যে বন্দিকে চাইবে সেই বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।
এদিকে হামাসের এসব দাবি ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছিল সেটি থেকে হামাস প্রধান বিষয়গুলো পরিবর্তন করে ফেলেছে।
কেন আটকে আছে যুদ্ধবিরতি
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে বলা আছে— প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি হবে। ওই সময় হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেবে। আর ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে।
তবে সমস্যা হলো প্রস্তাবটির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে। এতে বলা হয়েছে যে, প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। আর এই ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আলোচনা করা হবে। তবে হামাস এটি মানতে চায় না।
তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে বিশ্বাস করে না। এ কারণে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর আগেই তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রতি চায়।
যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো জানিয়েছে তারা প্রথমে হামাসের এই জবাবটি পর্যালোচনা করবে। এরপর এটি পাঠানো হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে।