যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে একাই উড়োজাহাজ চালিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে ১৬ বছরের এক কিশোর। স্থানীয় সময় রোববার (৩০ জুন) সকালে লস অ্যাঞ্জেলেস হোয়াইটম্যান বিমানবন্দরে কয়েক দফা বিমান নিয়ে উড্ডয়ন এবং অবতরণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে কিশোর আহনাফ আবিদ মাহির।
৯ বছর আগে বাবা মইনুল হক ও মা আয়শা রুমার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে বিমানে চেপে যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণ করেন ছোট্ট আহনাফ আবিদ মাহির। সেই বিমানে চড়া থেকেই নীল আকাশে ডানা মেলে উড়ার স্বপ্নটা তার। বড় ছেলের স্বপ্নপূরণে এগিয়ে আসেন বাবা-মা। তাকে ভর্তি করা হয় লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি ফ্লায়িং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। সেখানে চলে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ।
প্রশিক্ষণকালীন প্রশিক্ষককের পাশে বসে বিমান চালালেও নিজের ১৬তম জন্মদিনে একাই বিমান নিয়ে আকাশে উড়াল দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন স্বপ্নবাজ এই কিশোর।
রোববার সকালে একাই উড়োজাহাজ নিয়ে বেশ কয়েকবার নীল গগনের সাদা মেঘের ভেলায় ভেসে আবার মাটিতে নেমে আসে মাহির। ছেলের আকাশে ভেসে বেড়ানোর স্বপ্ন পূরণ দেখে আনন্দে ভাসেন বাবা মাসহ বিমান বন্দরে উপস্থিত শুভাকাঙ্খীরা।
মাহির বাবা বলেন, এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। মাহির মা বলেন, সবার কাছে দোয়া চাই যাতে সে ভবিষ্যতে এটা ধরে রাখতে পারে।
মাহির ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর ছিলেন বাংলাদেশি ইলিয়াস খান। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নিয়ম অনুযায়ী ১৬ বছরে পা রাখার দিন থেকে একা বিমান চালানোর অনুমতি নিয়ে সে প্রথম বিমান চালিয়েছে।
ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টরের বিশেষ লিখিত অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তী এক বছর যাত্রীবিহীন কেবলমাত্র প্রশিক্ষণ নেয়া বিমানই চালাতে পারবে মাহির। এরপর ১৭ বছর পূর্ণ হলে প্রাইভেট পাইলট সার্টিফিকেট পাবে। তখন বাণিজ্যিক নয় এমন এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমান চালানোর অনুমতি পাবে মাহির। ধাপে ধাপে হবে দক্ষ পাইলট।
ইলিয়াস খান বলেন, মাহির আরও ছয়মাস আগে থেকেই একা উড়োজাহাজ চালানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। বয়সের জন্য আজকের দিন (রোববার) পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
আকাশ ভ্রমণের ভালো লাগাকে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী মাহির জানান তার অনুভূতির কথা। তিনি বলেন, আমি খুবই এক্সাইটেড। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে মাহির এ সাফল্যে খুশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই পাইলটকে এখন বেছে নিচ্ছেন তাদের অন্যতম প্রধান পেশা হিসেবে। তাদের ধারণা, এই পেশা তাদেরকে আরও সাফল্য এনে দেবে।