বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব। গত আট দশক পর ফের নক্ষত্র বিস্ফোরণের ঘটনা দেখতে চলেছে বিশ্ববাসী। এখন থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেকোনো ‘টি করোনাই বোরিয়ালিস’ নামক নক্ষত্রটি বিস্ফোরিত হতে পারে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)।
প্রতিবেদনে নাসা জানিয়েছে, ‘টি করোনাই বোরিয়ালিস’ নামক নক্ষত্রটি ‘করোনা বোরিয়ালিস’ নামক নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত। নক্ষত্রটি যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, যখন এ ধরনের নক্ষত্র বিস্ফোরিত হয়, এর ১৩ মাস আগে তার উজ্জ্বলতা সামান্য কমে যায়। ২০২৩ সালের মে মাসে এর উজ্জ্বলতা হঠাৎ কমে গেছে, তাই বিজ্ঞানীরা ধারণা করছে শিগগিরই নক্ষত্রটি বিস্ফোরিত হতে চলেছে। বর্তমানে ‘টি করোনাই বোরিয়ালিস’ নক্ষত্রে ১০ মাত্রায় নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে, যা শুধুমাত্র একটি ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করে দেখা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সেন্টারের (আইএসি) জানিয়েছে, ১২১৭ সাল থেকে এমন ধরনের নক্ষত্রের বিস্ফোরণ নথিভুক্ত করা হচ্ছে। ১৮৬৬ ও ১৯৪৭ সালে সবচেয়ে বড় ধরনের বিস্ফোরণ রেকর্ড করা হয়েছিল।
সংস্থাটির পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শওকত আওদেহ বলেন, বিস্ফোরণের সময় ‘টি করোনাই বোরিয়ালিস’ নক্ষত্রের উজ্জ্বলতায় দ্রুত পরিবর্তন ঘটবে, যাকে নোভা বলা হয়। তবে নক্ষত্রটি প্রতি কয়েক দশক পর পর বিস্ফোরিত হয় বলে একে পুনরাবৃত্ত নোভা বলে।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের আগ মুহূর্তে নক্ষত্রটি ভীষণ উজ্জ্বলভাবে জ্বলে উঠবে এবং কয়েক ঘণ্টার জন্য এটি নর্থ স্টারের মতো প্রজ্বলিত দেখাবে। নর্থ স্টারটি উর্সা মাইনর নক্ষত্রমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র।
আইএসি পরিচালক বলেন, ব্যাপকমাত্রায় উজ্জ্বলতার কারণে নক্ষত্রটির বিরল ওই বিস্ফোরণ পৃথিবীবাসী খালি চোখে দেখতে পাবে। এমনকি দূষিত বায়ুর শহরগুলো থেকেও তা দেখা যাবে। বিস্ফোরণটি প্রায় ১২ ঘণ্টা স্থায়ী হবে। এরপরে এর উজ্জ্বলতা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং এরপর বিবর্ণ ও ধূসর হয়ে যাবে। যা এক সপ্তাহ আকাশে নক্ষত্রটি দেখা যাবে।