গত কয়েকদিন ধরে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। আর পানি বাড়ার সঙ্গে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশত বসতবাড়ি, গাছপালাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
যমুনার ডানতীর রক্ষায় প্রকল্প চলমান থাকাকালীন ভাঙনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে, আগামী শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধের কাজ শেষ হবে।
চোখের পলকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে একের পর এক বসতবাড়ি। পাকা ভবন, ভিটে মাটি, গাছপালা, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না আগ্রাসী যমুনার এ ভাঙনের থাবা থেকে। আর নদী তীরবর্তী মানুষ ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙনে ভিটেমাটিসহ সব হারিয়ে অসহায় এ মানুষদের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। এখনও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে এসব এলাকার শত শত ঘর বাড়ি, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট। তাই ভাঙন আতঙ্কে এখন নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরের মানুষের।
নদী ভাঙন ঘরবাড়ি হারানো নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমার দুইটি দোচালা টিনের ঘর ছিল, একটি গরুর গোয়াল ছিল, রান্না ঘর, টিউবওয়েলসহ সব কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব নদীতে চলে গেছে। কোনো জিনিস সরাতে পারিনি। সব কিছু হারিয়ে আমার পরিবার এখন পুরো নিঃস্ব।’
স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম জানান, ভাঙন থেকে রক্ষায় ৩ বছর আগে নদীর ডানতীরে স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হয়। তবে সেই কাজ শুধু ব্লক তৈরি মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পাড় হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে কাজ না করায় এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য এ ভাঙন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আগামীকাল শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। এখন পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধের কাজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থেকে হাট পাচিল পর্যন্ত প্রায় সারে ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনার ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।