টানা তিন মাস ধরে বিশ্ববাজারে বাড়তির দিকে থাকা খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। কিছুটা কমেছে মাংস ও খাদ্যশস্যের দাম। যদিও বেড়েছে দুগ্ধজাত পণ্য, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিভাগের (এফএও) মাসভিত্তিক মূল্যসূচক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হওয়া খাদ্যপণ্যের ভিত্তিতে এফএওর এই সূচক তৈরি করা হয়। এফএও জানিয়েছে, জুন মাসে বৈশ্বিক খাদ্যসূচক ছিল ১২০ দশমিক ৬ পয়েন্ট। একই সূচক ছিল গত মে মাসেও। যদিও টানা তিনমাস বাড়ার পর এবার স্থিতিশীল থাকা এবারের সূচক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ কম।
জুন মাসে খাদ্যশস্যের সূচক ৩.৫ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ কমে ১১৫.২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১২৬.৬ পয়েন্টে। কাজাখস্তান এবং ইউক্রেনসহ কিছু প্রধান রফতানিকারক দেশে উৎপাদন কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি তুরস্কে অস্থায়ী আমদানি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের কারণে দামের এমন প্রভাব পড়েছে। জুন মাসে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলে ভুট্টা উৎপাদন আগের তুলনায় আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। অন্যান্য মোটা শস্যের মধ্যে, বিশ্বব্যাপী বার্লি ও জোয়ারের দামও জুন মাসে কমেছে।
এদিকে পাম, সয়া এবং সূর্যমুখী তেলের উচ্চ চাহিদার কারণে ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। ৩.১ শতাংশ বেড়ে ভোজ্যতেলের জুন মাসের সূচক দাঁড়িয়েছে ১৩১.৮ পয়েন্টে। বেড়েছে দুগ্ধ জাত পণ্যের দামও। পশ্চিম ইউরোপে দুধের খুচরা বিক্রি বৃদ্ধি ও দুধ সরবরাহ কমে যাওয়ায় জুন মাসে বেড়েছে মাখনের দাম। এদিকে আমদানি চাহিদা এবং ওশেনিয়ায় মৌসুমি দুধ উৎপাদনের কারণে জুন মাসে বিশ্বব্যাপী দুধের গুঁড়ো দাম কিছুটা বেড়েছে। বিপরীতে, বৈশ্বিক আমদানি চাহিদার মন্দার কারণে পনিরের দাম সামান্য হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে টানা তিন মাস কমার পর আবারও বেড়েছে চিনির দাম। মে মাসে চিনি সূচক ছিল ১১৭ পয়েন্টে। যা জুনে এসে ১১৯ দশমিক ৪ পয়েন্টে পৌঁছেছে। দাম বৃদ্ধির মূল কারণ ব্রাজিলে মে মাসে প্রত্যাশার চেয়ে কম ফলন। এছাড়া ভারতে অনিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত, ইউরোপীয় ইউনিয়নে পূর্বাভাসের তুলনায় কম ফলনে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এফএও আরও জানিয়েছে, জুন মাসে প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। মে মাসে মাংসের সূচক ছিল ১১৭ পয়েন্টে। যা জুনে এসে হয়েছে ১১৬ দশমিক ৯ পয়েন্ট। শীর্ষ কিছু রফতানিকারক দেশের অধিক সরবরাহের কারণে আন্তর্জাতিক মুরগির মাংসের দামের কমেছে। বিপরীতে কিছুটা বেড়েছে শূকর এবং গরুর মাংসের দাম। এদিকে, আমদানির স্থির গতির কারণে আন্তর্জাতিক শূকরের মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে।