দীর্ষ ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবনে সন্তান না হওয়ায় স্বামীকে তালাক দিয়েছেন স্ত্রী। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারলেন স্বামী। শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তের নাম হুমায়ুন কবির বাকি। তিনি উপজেলার মাসকা ইউপির মাসকা গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর ছেলে। আর ভুক্তভোগী একই উপজেলার ব্রাম্মনজাত গ্রামের ফজলুর রহমান খানের মেয়ে হাফসা আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৭ বছর আগে উপজেলার ব্রাম্মনজাত গ্রামের হাফসা আক্তারের সঙ্গে মাসকা গ্রামের হুমায়ুন কবির বাকির বিয়ে হয়। বিয়ে পর কিছু বছর ভালো গেলেও স্বামীর শারীরিক সমস্যার কারণে তাদের দাম্পত্যজীবনে কলহ শুরু হয়। দেড়মাস ধরে দাম্পত্য কলহের মাত্রা বেড়ে যায়। একপর্যায়ে গত কুরবানির ঈদের পরের দিন হাফসা আক্তার তার বাবার বাড়িতে চলে যায় এবং বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) কাজী অফিসে গিয়ে স্বামীকে তালাক দেন।
এই খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার রাতে বাড়িতে গিয়ে হাফসার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে। এতে তার মুখের এক অংশ ঝলসে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
হাফসা আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে তার স্বামীর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। ১৭ বছর দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তানাদি নেই। তাকে বার বার বলার পরে সে চিকিৎসা করে না। উল্টো তাকে বেধড়ক মারপিট করে। তার সঙ্গে বাড়ির লোকজনও তাকে নির্যাতন করতো। তার পৈশাচিক আচারণের অতিষ্ঠ হয়ে বৃহস্পতিবার তাকে তালাক দেই। এই খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে আমাদের ঘরে রাতের খাবার খাওয়ার সময় আমার নাক-মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে তিনি পালিয়ে যায়।
স্থানীয় উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণী হাসান জানায়, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এমন জঘন্যতম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, অ্যাসিড নিক্ষেপের খবর শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।