স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন মিটফোর্ড হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। তার আসার খবরে সব পরিপাটি হয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়েই উপস্থিত হন ডাক্তার, নার্স, কমকর্তা ও কর্মচারীরা। কিন্তু মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরই পাল্টে যায় চিত্র। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সেবা না পেয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়ান রোগীরা। এসময় নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন তারা।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (এসএসএমসি) মিটফোর্ড হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। পরিদর্শন শেষে এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালের কোনো অসঙ্গতি তার চোখে পড়েনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনের খবরে সব পরিপাটি হয়ে যায়। হাসপাতালে নামে সুনশান নীরবতা। নির্দিষ্ট সময়েই উপস্থিত হন ডাক্তার, নার্স, কমকর্তা ও কর্মচারীরা। যার কারণে হাসপাতালটি পরিদর্শনে গিয়ে কোনো অসঙ্গতি পাননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মূলত মন্ত্রী আসার খবরে মুহুর্তের মধ্যেই ভোল পাল্টে ফিটফাট হয়ে যায় পুরো হাসপাতাল। কিন্তু মন্ত্রী চলে যেতেই আবার ফেরে আগের চিত্র। নানা অভিযোগ করেন রোগীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সেবা না পেয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়ান রোগীরা। এসময় নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন তারা। মূলত মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরই পাল্টে যায় চিত্র।
রোগীদের অভিযোগ, যারা টাকা দিচ্ছে তাদেরকে পেছন থেকে সিরিয়াল ব্রেক করে ডাক্তারের চেম্বারে ঢোকানো হচ্ছে। অথচ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেও সিরিয়াল পাওয়া যায় না।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের ল্যাব, আইসিইউ, বার্ন ইউনিট, এমআরআইসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরিদর্শন শেষে হাসপাতাল এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি।
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘হাসপাতালের কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়েনি। আমি নিয়মিতভাবেই বিভিন্ন হাসপাতাল ক্লিনিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করব। আমার কাজ হচ্ছে রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা ঠিকমতো পাচ্ছে কি-না, ডাক্তাররা উপযুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারছে কি না, সেটা দেখা। রোগী এবং ডাক্তার উভয়েকেই সুরক্ষা দেয়া আমার দায়িত্ব। এজন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইন নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এসময় তিনি সলিমুল্লাহ মেডিকেলের অবকাঠামো এবং এমবিবিএস প্রথম ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা এই দেশের ভবিষ্যত। আমি আশা করব তোমরা ভালোমতো পড়াশোনা করে দেশের উপকার করবে। আমি বলবো, তোমরা অনেক ভাগ্যবান। চিকিৎসকদের অ্যাপ্রোন পড়ার যে সৌভাগ্য সেটা সবার হয় না। অ্যাপ্রোনের মর্যাদাটা তোমাদের ধরে রাখতে হবে। তোমাদের যথাযথভাবে পড়াশোনা করে নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। পিতামাতাকে সম্মান করতে হবে। পিতামাতাকে সম্মান করলে জীবনে সাফল্য অর্জন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদের থাকার এবং সুযোগ সুবিধা নানা অপ্রতুলতা রয়েছে। আমি রাতারাতি হয়তো পারব না। কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব তোমাদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে। তোমাদের ভালোভাবে রাখতে।’
সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. মাজহারুল ইসলাম খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানসহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।