সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তারই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ফের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। গতকাল রোববার বঙ্গভবনে সাম্প্রতিক চীন সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে চলমান কোটা সংস্কার নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল রোববার রাতে সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার হিসেবে স্লোগান দিতে থাকেন। এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ স্লোগান দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি চিনি না; এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার না। আর তোমাদের কথা ভেবে আফসোস শুধু আফসোস হচ্ছে ……।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অপমানজনক’ বক্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ২টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করার কথা রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজও যোগ দিয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার-হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা-দেশটা কারো বাপের না’, ‘তুমি নও আমি নই-রাজাকার রাজাকার’, ‘কে রাজাকার কে রাজাকার-তুই রাজাকার তুই রাজাকার’, ‘আমরা নাকি রাজাকার-ধিক্কার ধিক্কার’, ‘এসো ভাই এসো বোন-গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’- স্লোগান দিচ্ছেন।
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবিকে দমাতে গতকাল রাতে বিভিন্ন জায়গায় হামলা করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে। আমাদের দাবি, কোটার যৌক্তিক সংস্কার করেই আমরা রাজপথ থেকে সরে যাব। আমরা এখানে আন্দোলন করতে আসিনি, আমরা পড়ালেখা করতে এসেছি।