29 C
Dhaka
Thursday, September 19, 2024

আরমানকে মুক্ত করতে টিউলিপের সহায়তা চেয়েছিল পরিবার

ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপরই ‘আয়না ঘর’ থেকে বেরিয়ে আসেন হাসিনা সরকারের সময় গুম হওয়া ব্যক্তিরা। দীর্ঘ ৮ বছর বন্দী থাকার পর হাসিনা সরকারের পতনের দিন মধ্যরাতে মুক্তি পান জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাশেম আরমান। পরদিন পরিবারের কাছে ফেরেন তিনি।

আয়না ঘরে তার ‘বন্দিদশা’ নিয়ে ইতোমধ্যে চাঞ্চল্যকর বেশকিছু তথ্য দিয়েছেন আরমান। বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আয়না ঘরের দিনগুলো নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এবার আরমানের পরিবারের বরাতে চাঞ্চল্যকর আরো একটি তথ্য সামনে এনেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ।

টেলিগ্রাফ বলছে, আরমানকে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্ত করতে যুক্তরাজ্যের ‘সিটি মিনিস্টার’ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে সহায়তা চেয়েছিল তার পরিবার। তবে তারা সহায়তা পাননি। প্রতিবেদনে বলা হয়, খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় এক দশক ধরে আটক ব্রিটিশ-প্রশিক্ষিত ব্যারিস্টার কাশেম আরমানকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন টিউলিপ।

আরো পড়ুন  অতিথিদের শুধু বিমানের টিকিটই নয়, খামভর্তি ডলারও দিলেন নবদম্পতি

২০১৬ সালে নিখোঁজ হওয়া ৪০ বছর বয়সী কাশেম আরমানের আইনজীবীরা বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে তাকে ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি দিতে পারতেন। তবে তিনি তা করেননি।

আইনজীবী মাইকেল পোলাক বলেন, “বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরেও টিউলিপ শেখ হাসিনাকে তার মহান আদর্শ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আমরা টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে এ বিষয়ে (আরমানের মুক্তির বিষয়ে) কথা বলার জন্য সম্মানজনকভাবে অনুরোধ করেছিলাম। এই অনুরোধ আমার ও আরমানের মায়ের পক্ষে থেকে করা হয়। তিনি টিউলিপকে, নিজের ছেলেকে তার ছোট দুই মেয়েসহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য হস্তক্ষেপ করতে বলেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, টিউলিপ সাহায্য না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।”

আরো পড়ুন  মালয়েশিয়ায় জাল পাসপোর্ট তৈরির বাংলাদেশি মূলহোতা গ্রেফতার

পোলাক বলেন,”এসব কিছু সত্ত্বেও, টিউলিপ আরমানকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদি তিনি হস্তক্ষেপ করতেন, তাহলে আলোহীন গোপন কক্ষে আট বছর বন্দী না থেকে, আরমান স্ত্রী এবং দুই কন্যার সঙ্গে থেকে তাদের বেড়ে উঠা দেখতে পারতেন। টিউলিপ কেন এমনটা করলেন, আমি এখনও বুঝতে পারছি না।”

টেলিগ্রাফ লিখেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে, টানা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধীদের আক্রমণ করা হয়, গ্রেপ্তার করা হয় এবং গোপনে বন্দি করা হয় অনেককে। একইসঙ্গে চলেছে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডও। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাশেম আরমানকে নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

আরো পড়ুন  ভারতীয় মিডিয়ার খবর তিস্তার পর এবার পদ্মার পানি নিয়েও ঝামেলা বাধাতে পারেন মমতা

আইনজীবীরা বলেছেন, কাশেম আরমানকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন তার পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা এবং শত শত মানুষের গুমের জন্যও তারা দায়ী। তিনি বলেন, ‘আরমানকে আটক করা শেখ হাসিনার নীতির প্রতিফলন। এটা স্পষ্ট যে, তার শাসনামলে জোরপূর্বক গুম এবং নির্বিচারে আটক রাখার একটি সরকারি নীতি ছিল। তাই শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশেম আরমানকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ সংবাদ