35.3 C
Dhaka
Wednesday, September 11, 2024

শেখ হাসিনার পতনের পর আর্থিক স্বচ্ছতার পথে বাংলাদেশ, যা থাকছে ‘শ্বেতপত্রে’

বাংলাদেশে গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক সফলতার যেসব মানদণ্ড অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। তথ্যের এমন অসামঞ্জস্যতাপূর্ণতা পরীক্ষা করার মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে গত দেড় দশক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী সরকারের অবাধ দুর্নীতির হিসাব জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিবিদ এবং জননীতি বিশ্লেষক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে শেখ হাসিনার শাসনামলে অব্যবস্থাপনার ‘শ্বেতপত্র’ তৈরি করতে বলেছে। ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ৯০ দিন সময় দেয়া হয়েছে যা তিনি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করবেন। ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেয়ার তিন দিন পর ৮ আগস্ট বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রশাসন বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. ইউনূস।

আরো পড়ুন  ইসলামী ব্যাংকের ৩৩০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, বাংলাদেশ ব্যাংকে দুদকের চিঠি

শনিবার (২৪ আগস্ট) ঢাকায় এক সাক্ষাৎকারে ৬৮ বছর বয়সী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের সঠিক তথ্য পাওয়া নিয়ে একটি গুরুতর সমস্যা রয়েছে। তথ্যকে বানোয়াট করা হয়েছিল। তথ্যকে দমন করা হয়েছিল। আমি এই নৈরাজ্যকে ‘ডেটা এনার্কি’ বলছি।’

প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বিশেষজ্ঞ অরুণ দেবনাথের নিবন্ধটি সোমবার প্রকাশ করেছে।

দূর থেকে দেখানো হয়েছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে একটি অর্থনৈতিক সাফল্যের অগ্রদূত হিসেবে ব্যাপকভাবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু ভট্টাচার্য বলেন, হাসিনার প্রশাসন সম্ভবত রপ্তানি, মুদ্রাস্ফীতি এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ভুল তথ্য প্রকাশ করেছে, যা ‘অকল্পনীয় অর্থনৈতিক দুর্বলতা’ তৈরি করেছে।

আরো পড়ুন  কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিল সরকার

শেখ হাসিনা, যিনি গণবিক্ষোভের মুখে এই মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ভারতে পালিয়ে যান, ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৩৬ ট্রিলিয়ন টাকা (১৫৩ বিলিয়ন ডলার) দেশী ও বিদেশী ঋণ রেখে যান, যা তিন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের সমান।

ভট্টাচার্য্য বাংলাদেশের জন্য তিনটি প্রধান বিপত্তি চিহ্নিত করেছেন: সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতি। গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে এ জন্য দায়ী করেছেন হাসিনা। , ভট্টাচার্য বলেন, আমরা বুঝতে পারি তা কিন্তু খুব যুক্তিযুক্ত ছিল না,’।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কর-টু-জিডিপি অনুপাত ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বনিম্ন। অনুপাতটি ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এটিকে গোলকধাঁধা উল্লেখ করেন এতে করে অনেকে করের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। সম্ভবত এর একটি বড় অংশ দেশের বাইরে পাচার করে দেয়া হয়েছে।’

আরো পড়ুন  এস আলমের ৬ ব্যাংকের ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা

অন্তর্বর্তী সরকারের তাৎক্ষণিক কাজ হলো বিদ্যুতের মতো পরিষেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গত সপ্তাহে বলেন, দেশটি জরুরি সহায়তা হিসেবে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলারের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে এবং অন্যান্য বহু-পাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থাদের কাছ থেকে তহবিল চাইছে। নিবন্ধটি বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

সর্বশেষ সংবাদ