22 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ধরে রাখতে পারেনি আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। কিন্তু দলটি তাদের অর্জন ধরে রাখতে পারেনি। তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে কীভাবে দেখে, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আওয়ামী লীগ নিজেদের কীভাবে দেখে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে একটি মিলনায়তনে ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইএমসিএবি) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন জামায়াত আমির।

ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করে লক্ষ্মণ সেনের মতো দেশত্যাগ করা উনার জন্য মানানসই হয়নি। জামায়াত নেতারা কখনো দেশত্যাগ করেননি। তারা মোকাবিলা করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম বুকে ধারণ করে দেশেই ছিলেন। কখনো দেশত্যাগ করেননি।

আরো পড়ুন  আদর্শ সমাজ গঠনে মুফাসসিরদের ভূমিকা অপরিসীম : ডা.শফিকুর রহমান

এই মুহূর্তে জামায়াত কী করছে—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। একজন প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। দেশে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা বলতে কিছু নেই। পুলিশ বাহিনী জনগণের বন্ধু না হয়ে শত্রুতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে। দেশ সংস্কার করতে হবে। এই মুহূর্তে জামায়াতের প্রধান কাজ হলো ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়ানো।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির বলেন, তারা চান দেশে দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসুক। দেশের সংবিধান, প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার হওয়া দরকার। দল বা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা যাবে না। তারা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। জামায়াত দল হিসেবে সবার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

আরো পড়ুন  আ. লীগ সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই : মান্না

জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় অভিযোগ করে শফিকুর রহমান বলেন, দেশের কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদের অপবাদ দেওয়া হতো। এমনকি গাইবান্ধায় যখন একজন সংসদ সদস্য নিহত হলেন, তখন সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী এই হত্যার জন্য জামায়াতকে দায়ী করলেন। পরে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। জামায়াত সব সময় গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে। জামায়াতের দুজন মন্ত্রী সরকার পরিচালনায় ছিলেন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি কখনো তাদের স্পর্শ করেনি। মানুষের দুঃখ-মুসিবতে পাশে দাঁড়িয়েছে। জামায়াত কখনো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল না, এখনো নেই। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ১ আগস্ট তৎকালীন সরকার অন্যায়ভাবে নির্বাহী আদেশবলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, যা দল হিসেবে জামায়াতের ওপর বড় জুলুম।

জামায়াতের আমির বলেন, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর জামায়াতে ইসলামী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় পাহারাদারের ভূমিকায় রয়েছে। আমরা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, সহায়সম্পদ, ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিয়েছি, যাতে কেউ ভাঙচুর করতে না পারে। আমরা বিশ্বাস করি, সব মানুষ সমান। এখানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘুর কোনো প্রশ্ন নেই। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যদি কোথাও প্রমাণিত হয় যে, আমাদের একজন কর্মী সন্ত্রাস করেছে, তাহলে আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাইব এবং নিজেরা আইনের হাতে সোপর্দ করব।

আরো পড়ুন  শরিকদের আসনে স্বতন্ত্রদের জেতাতে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী চক্রের নগ্ন ভূমিকা ছিল: ইনু

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, ইমক্যাবের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক মাছুম বিল্লাহ, সাবেক সভাপতি বাসুদেব ধর, প্রদীপ্ত নারায়ণ, সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদ হোসেন, রাজিব খান, মিজানুর রহমান, রাশেদুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আবু আলী, আমিনুল হক ভূঁইয়া, সিয়াম সরোয়ার জামিল, কাউসার আযম, তারিকুল ইসলাম, শাহীন পারভেজ, জাকির হোসেন, মো. মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ