ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎমকের ওপর হামলা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।
সারজিস আলম বলেন, আমার ডাক্তার ভাইদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপরে যে বা যারা হাত তুলেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, যদি কোনো পেশেন্টের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা কোনো ডাক্তার দায়ী থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তারও বিচার হতে হবে ।
আন্দোলনের এ সমস্বয়ক বলেন, আমার মনে হলো আর আমি কারো গায়ে হাত তুলে ফেললাম, এই স্পর্ধা কখনো মেনে নেয়া যায় না। সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা সোচ্চার আছে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শনিবার (৩১ আগস্ট) ঢামেকে নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেবা সংস্কার পরিষদ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা না হলে এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা না হলে ইমার্জেন্সি অপারেশন/চিকিৎসা ছাড়া সকল প্রকার অপারেশন এবং সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের ওপর হামলার খবরে ফেসবুক লাইভে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি জানান, কিছুক্ষণ আগে ঢামেক হাসপাতালে অপ্রত্যাশিত ঘটনা হয়েছে। রোগী মারা যাওয়ায় সংক্ষুব্ধ একটি পক্ষ এই হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে বলেন, চিকিৎসকদের তাদের মতো করে কাজ করতে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন।
হাসনাত বলেন, একটি বিষয়ে আমি আপনাদের স্পষ্ট করতে চাই, আমাদের গণঅভ্যুত্থান যে মূল স্পিরিট ছিল, আমাদের গণঅভ্যুত্থানের যে জায়গাটি ছিল, সেই জায়গাটি ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে। একটি সিস্টেম ডেভেলপ করবে এবং এই সিস্টেমের মধ্য থেকে আমাদের সমাজ, আমাদের রাষ্ট্র, তথা আমাদের দেশ পরিচালিত হবে। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরনের কাজগুলো করা হচ্ছে, আজকে ডাক্তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হলো।
তিনি আরও বলেন, আপনি যদি ফোর্স করেন যে আমার রোগীকে বাঁচিয়ে দিতে হবে, এখনই বাঁচিয়ে দিতে হবে, বাঁচিয়ে দিতেই হবে—এটা তো প্রফেশনালিজমের মধ্যে পড়ে না।