বগুড়ায় ধাওয়া খেয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে এরুলিয়া খন্দকার পাড়ায় মসজিদের ভেতর তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত যুবকের নাম রতন জিলাদার ওরফে কাবিলা (৩০)। তিনি বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া জিলাদারপাড়ার মৃত শাবদুল জিলাদারের ছেলে। তিনি মাংসের দোকানে কর্মচারী ছিলেন।
কাবিলা তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত বুধবার একই এলাকার আরিফুল ও আমিন নামের দুই যুবককে মারধর করে।
ওই ঘটনার জেরে কাবিলাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন নিহতের মা শিরানা বেওয়া ও বোন সফুরা বেগম।
নিহতের মা ও বোন জানান, অভিযুক্ত আরিফুল সম্পর্কে কাবিলার ভাগ্নে, আর আরিফুলের ভগ্নিপতি হলো আমিন। আরিফুল তিন বছর আগ থেকে কাবিলার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করছিল।
কিছুদিন আগে কাবিলা বাইরে থাকায় তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে আরিফুল। এরপর ওই ঘটনা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তাকে আবার ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
কাবিলার স্ত্রী জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আরিফুল ও আমিন তার ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। সে সময় কাবিলা বাড়িতে পৌঁছলে ওই দুজন পালিয়ে যায়। রাতে তিনি (কাবিলার স্ত্রী) আগের ঘটনাসহ বিস্তারিত স্বামীকে জানান।
পরদিন দুপুরে আরিফুল ও আমিনকে গ্রামের রাস্তায় বসে থাকতে দেখে কাবিলা তাদের মারধর করে। পরে আরিফুল বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পুলিশ ধর্ষণের বিষয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
নিহতের স্ত্রী আরও জানান, আরিফুল ও আমিন বুধবার দুপুরের পর থেকেই কাবিলাকে হুমকি দিচ্ছিল। শুক্রবার ভোরে কাবিলা গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়।
এরপরই তারা রামদা নিয়ে ধাওয়া করে। কাবিলা ভয়ে স্থানীয় এক মসজিদের ভেতর ঢুকলে সেখানেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করে তারা।
এরুলিয়া বড় জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন কারি মোহাম্মদ আসলাম হোসেন জানান, ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খোলা রেখে তিনি ওয়াশরুমে যান।
এরই মধ্যে মজসিদের বারান্দায় চিৎকার শুনতে পান। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে তিনি ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখেন। মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানানোর পর গ্রামের লোকজন গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়া সদর থানার এসআই আব্দুর রহিম কালবেলাকে বলেন, নিহত রতন ওরফে কাবিলার স্ত্রীকে এর আগে ধর্ষণের জের ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের পরিবার জানিয়েছে।
ঘটনার পর থেকে আরিফুল ও আমিন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করছে। নিহত রতনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।