বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির (পিসিএ) খসড়া ঢাকায় পাঠিয়েছে ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থিত ইইউ সদর দপ্তর থেকে ঢাকায় এই খসড়া পাঠানো হয়। ঢাকাস্থ ইইউ মিশন এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে, খসড়ার বিস্তারিত জানা যায়নি।
ঢাকা ও ব্রাসেলসের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। দুইপক্ষের মধ্যে ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের সম্পর্কের শুরুতে ইইউ ছিল বাংলাদেশের কাছে দাতাগোষ্ঠী (উন্নয়ন অংশীদারিত্ব)। পরবর্তী সময়ে এই সম্পর্ক রাজনৈতিক পর্যায় পর্যন্ত উন্নীত হয়।
২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর দুইপক্ষের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী ঢাকায়। সংলাপে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেন তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। অন্যদিকে, ইইউয়ের পক্ষে জোটের বৈদেশিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমহাসচিব এনরিকে মোরা পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ওই রাজনৈতিক সংলাপে সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় নিতে পিসিএ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে সম্মত হয় উভয়পক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর ইইউয়ের উচ্চপর্যায়ের নেতারা ঢাকা সফর করেন এবং বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ব্রাসেলস সফর করে দুইপক্ষ একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করেন।
সবশেষ গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পাওলা পামপালোনি ঢাকা সফর করে পররাষ্ট্র-শ্রম-বাণিজ্য ইস্যুতে বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন। এ ধারাবাহিকতায় এবার পিসিএ চুক্তির খসড়া ঢাকার কাছে পাঠিয়েছে ব্রাসেলস। পিসিএ চুক্তি সইয়ের আগে এই খসড়া নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বছরজুড়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। শিগগিরই ব্রাসেলসে এই খসড়া নিয়ে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
জানা গেছে, ইইউয়ের পক্ষে ওই বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পাওলা পামপালোনি। এরপরের বৈঠকটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এভাবে পিসিএ চুক্তির আগে খসড়াটি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সারাবছরে কমপক্ষে পাঁচটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল ইইউ।