চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত পথচারী কিশোর সাইমুন (১৪) মারা গেছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত ৮ টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
সাইমুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা মো. ইউনুস। তারা হাজীগঞ্জ পৌর এলকার মিঠানিয়া ব্রিজের পাশে এসএস বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। ওই এলাকার একটি হিফজ খানায় হিফজুল কুরআন বিভাগে সাইমুন পড়াশুনা করতেন। সাইমুনের মূল বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের চরবাকিলা গ্রামে।
সাইমুনের বাবা ইউনুস কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, সাইমুন আমার একমাত্র ছেলে। ঘটনার সময় সে একটি কাজে হাজীগঞ্জ বাজারে যায়। সেখানে সে বড় মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার জন্য সাধনা ওষুধালায়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় সে মারামারির মধ্যে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। অজ্ঞাতরা তাকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হাজীগঞ্জ মুন হসপিটালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় রেফার করা হয়। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যায় সে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিন ফারুক জানান, সাইমুমের মৃত্যুর বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে হাজীগঞ্জ বাজারে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় হাজীগঞ্জ বাজার। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিক। পরে শনিবার হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন পৌর এলাকার টোরাগড় গ্রামের পারভেজের স্ত্রী তুহিন বেগম। এছাড়া, এই ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে মো. রিফাত (১৯) ও মো. ইমরান হোসেন (২৩) নামে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপির অধীনস্থ সকল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের সকল ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।