পাবনায় ক্লাব দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।
শনিবার (১২অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া উপজেলার পুকুরপাড় এলাকার উদয়ন ক্লাব দখলকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির অন্তত ১৮ জন হয়েছেন। এছাড়া দুপক্ষের সংঘর্ষে আওয়ামী লীগেরও অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় ও দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে। এছাড়া আহতদের দেখতে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, ওসি শফিকুল ইসলাম এবং সেনা সদস্যরা হাসপাতালে গিয়েছেন।
জানা যায়, পুকুরপাড় গ্রামে উদয় সংঘ নামে একটি সামাজিক সংগঠন রয়েছে। সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। বেশ কিছুদিন ধরে এই সংগঠনের কার্যালয়ের চাবি সংগঠনের সভাপতি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম ফকিরের কাছে রয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটির উপদেষ্টা ফয়জুল করিম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সানোয়ার হোসেন, আহম্মদ আলী, আব্দুর রাজ্জাক ও পুকুরপাড় আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী সালাম ফকিরের কাছ থেকে চাবি নিতে জোরাজুরি করছেন। কিন্তু সালাম ফকির চাবিটি ক্লাবের সদস্য হেলালের কাছে রয়েছে বলে জানান। পরে শনিবার সন্ধ্যায় হেলালকে ডেকে নিয়ে এসে চাবিটি আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারীদের কাছে চাবি দেন দেয় সালাম ফকির।
এরপরেও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুল, সানোয়ার, রাজ্জাক, রওশন ও আহম্মদ আলীর নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দুস সালামসহ তার লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে উভয় দলের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী মারাত্মক আহত হয়।
তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেজন। তারা হলেন পুকুর পাড় গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি কর্মী কালাম, আকরাম, সাদ্দাম, কালাম-২, গাজী, জব্বার, ঈমন, মমিন, ছাব্বির, শাহিন, হেলাল, তালেব, আলো প্রমানিক। এছাড়া আহত নিরজাপ, সাহাদত, ছানোয়ার হোসেনকে পাবনায় এবং আব্দুল মালেককে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
খান মরিচ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জিন্নাহ আলী বলেন, শুনেছি ক্লাবের চাবি ও হিসাব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ২০-২৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্লাবের চাবি দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা ও ঢাকা পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।