এক বছরের বেশি সময় ধরে জ্বলছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। সেখানে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার ভবন ও স্থাপনাগুলোতে হামলার সময় বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
দৈনিকটি এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি সেনাদের বর্ণনাও তুলে ধরেছেন। সেখানে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাদের পক্ষ থেকে কারা এই অমানবিক কাজ করে যাচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যে দলিল-প্রমাণ হাতে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারকারী ইহুদিবাদী সেনাদের অন্তত ১১টি সেল গাজায় তৎপর রয়েছে। এসব সেল থেকে অপরাধযজ্ঞ চালানোর সময় ইসরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনীর সেনারা তাদের সঙ্গে থাকে।
জানা যায়, কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে বলেছে, গাজা উপত্যকায় দখলদার সেনাদের এ ধরনের অপরাধযজ্ঞ এখন স্বাভাবিক বিষয়য়ে পরিণত হয়েছে। তারা বলেছে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পাশাপাশি ইহুদিবাদী সেনা কমান্ডাররা এই অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অবগত রয়েছে।
ব্রিটেনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরেন্স হিল ক্যাথেরিন এ সম্পর্কে জানান, ফিলিস্তিনি বন্দিরা সামরিক হোক বা বেসামরিক হোক তাদের দিয়ে বিপজ্জনক স্থানে তল্লাশি চালানো সম্পূর্ণ বেআইনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিপজ্জনক স্থানগুলো শনাক্ত করার কাজে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ব্যবহার করার ঘটনা নিকট ইতিহাসে খুব বেশি একটা পাওয়া যায় না। তবে মার্কিন বাহিনী ভিয়েতনাম যুদ্ধে একই ধরনের কাজ করেছিল যেটিকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর আগে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছিল, ইসরায়েলে সেনারা ফিলিস্তিনি বন্দিদেরকে হাত বাঁধা অবস্থায় হামাসের দুর্গম টানেলগুলোর মধ্যে ঢুকতে বাধ্য করে যাতে সেখানে আগে থেকে বোমা বা মাইন পাতানো থাকলে বন্দিরা নিহত হয়। ২০০৯ সালে গাজা আক্রমণের সময়ও আইডএফ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল।