সাবেক সংসদ সদস্য, কক্সবাজার-০২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, জামায়াতে ইসলামী দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা ইলহাম কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুতুবদিয়া উপজেলার ওলামা বিভাগের আয়োজনে ওলামা-মাশায়েখ মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামের বহু নেতাকর্মীকে হামলা-মামলা, জেল, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, এমনকি অসংখ্য নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তবুও জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী দ্বীন কায়েমের আন্দোলন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে পিছপা হয়নি। এমনকি কোনো নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি, জনগণের সঙ্গেই রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আগামী দিনে কোরআন ও হাদিসের আলোকে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হলে সবাই আল্লাহর বিধান মেনে চলবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে বাংলাদেশের মানুষ যে জালিম শাসকের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছি, এ ধরনের জালিম শাসক আর কোনো দিন ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আলেমরা জাতির ইমাম, সঠিক পথ দেখানো হচ্ছে ইমামের কাজ। সৎ, কল্যাণকর সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুক্ত হয়ে নিজেকে এগিয়ে যেতে হবে। সৎ, কল্যাণকর কাজ করা, যাবতীয় খারাপ কাজে বাধা প্রদান করে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েমে নিজেকে সম্পৃক্ত করা।
এ ছাড়া তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে তৌহিদের পরিষদ, ইসলামের পরিষদ , ইসলামি নেতৃত্ব পরিবার থেকে সংসদ পর্যন্ত কায়েম করাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কাজ। ইসলামের আলোকে দেশ পরিচালিত করা। ফ্যাসিবাদীদের নিয়োগকৃত কর্মকর্তা পরিবর্তন না করলে বিপ্লবের সুফল আসবে না। বিপ্লবের সুফল অর্জন করতে হলে তাদের পরিবর্তন করে সৎ, যোগ্যদের বিভিন্ন পদে আসীন করতে হবে।
কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে দেশ পরিচালিত হলে সবকিছু ঠিকঠাক চলবে উল্লেখ করে তিনি জানান, মদিনা সনদেই রয়েছে- একটি সুখী-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সব আয়োজন। যেখানে কোনো বৈষম্য নেই। জাতি ধর্ম-বর্ণের কোনো ভেদাভেদ নেই। মানুষ হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে সবাই সমান। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন হবে অভাবনীয়। মদিনা সনদে দেশ পরিচালিত হলে দেশের নাগরিককে অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হবে না, রক্ত দিতে হবে না, জীবন দিতে হবে না। নাগরিক তার মৌলিক সব অধিকার রাষ্ট্র থেকে পাবে।
পাশাপাশি তিনি বলেন, যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা তাদের মতবাদ কায়েমের চেষ্টা করায় মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নামাজ-রোজার মতোই আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ফরজ করেছেন। যতক্ষণ না বাংলার জমিনে আল্লাহর দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।
তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছায়াতলে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপজেলা ওলামা বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আবু মুছার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য , সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, সাবেক সংসদ সদস্য, কক্সবাজার-০২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, বিশেষ অতিথি মাওলানা শফিউল হক জিহাদী সভাপতি, বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ পরিষদ, কক্সবাজার, আ স ম শাহরিয়ার চৌধুরী, আমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুতুবদিয়া।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নুরুল আমিন। বক্তব্য দেন জাকের হোসেন, কর্মপরিষদ সদস্য, কক্সবাজার। ফাশিয়াখালী কামিল মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, সাবেক অধ্যক্ষ হাফিজ আবদুল্লাহ, হাফেজ হাসান, সুপার মোরশেদুল মানান, চট্টগ্রাম জিরি মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা রজি উল্লাহ, আনোয়ারুল মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা জাহেদ উল্লাহ প্রমুখ।