সাতক্ষীরার তালা উপজেলার লাউতাড়া গ্রামে চিরকুট লিখে মৃত্যুর জন্য প্রেমিককে দায়ী করে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নিহত কলেজছাত্রীর নাম প্রিয়াংকা সরকার। সে উপজেলার হাতবাস গ্রামের দরিদ্র মিঠুন সরকারের মেয়ে। অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম রিপন সরকার। একই গ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের হাউজ চার্চ পালক বিকাশ সরকারের ছেলে রিপন।
জানা গেছে, প্রিয়াংকার সঙ্গে রিপনের দীর্ঘদিন ধরে প্রেম চলছিল। রিপন ও প্রিয়াংকা উভয়ে সাতক্ষীরায় অনার্সে পড়তো। এই প্রেমের বিয়েতে প্রিয়াংকার পরিবার রাজি হলেও প্রেমিক রিপনের বাবা পালক বিকাশ সরকার আপত্তি তোলেন।
একপর্যায়ে রিপনও প্রেমকে অস্বীকার করতে থাকে। এ নিয়ে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হলে শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিয়াংকা নিজ ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার আগে প্রিয়াংকা একটি নোটবুকে মৃত্যুর জন্য প্রেমিক রিপনকে দায়ী করে।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে ছেড়ে যাবে না, তা যায় হয়ে যাক। তুমি ঠকিয়েছো আমাকে। তুমি শেষ করে দিলে সবকিছু। আমার মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ী।’
সেখানে আরও লেখা ছিল, ‘তোমার মতো কেউ ভালোবাসবে না আমাকে। আবার তোমার মতো ক্ষতিও করবে না কেউ। বাই (ভালো থেকো) (রিপন প্রিয়াংকা)।’
নোটবুকের ওই একই পৃষ্ঠায় চিরকুটের ওপরের অংশে রিপন নিজ হাতে প্রিয়াংকাকে কিছু নির্দেশনা লিখে দেয়। যেখানে রিপন প্রিয়াংকার উদ্দেশ্যে লেখে, ‘০১। যারা ব্যাড তাদের সাথে চলাফেরা করা যাবে না, ০২। এমন কোনও বান্ধবী থাকবে না যে খারাপ, ০৩। ক্লাস টাইম শেষ হলে আমার ডিপার্টমেন্ট এর কাছে আসবা।’ লেখার শেষাংশে রিপনের সই রয়েছে।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় মেয়ের বাবা মিঠুন সরকার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে রিপন ও তার বাবা বিকাশ সরকারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তার কলেজছাত্রীর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।