যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। একেক রাজ্যে এটি নিয়ে একেক রকম আইন রয়েছে। তবে এবার দেশটির ১০ অঙ্গরাজ্য গর্ভপাতের কানুন নিয়ে গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছে। একজন নারীর গর্ভে ভ্রূণ আসার পর কতদিন পর্যন্ত গর্ভপাত করতে পারবেন সেটি নির্ধারিত হবে এই গণভোটে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা, অ্যারিজোনা, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, কলোরাডো, ফ্লোরিডা, মেরিল্যান্ড, নেভাদা, নিউইয়র্ক এবং সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাত ইস্যুতে ভোট হবে। ভোটের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করবেন নারীর গর্ভে ভ্রূণ আসার পার কতদিন পর্যন্ত গর্ভপাত করতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে ৫০ বছর আগের একটি রায় বাতিল করে দেন। ওই রায়ে বলা হয়, গর্ভপাতের আইন কী হবে তা ঠিক করবে অঙ্গরাজ্যগুলো। এই রায়ের আলোকেই নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটের পাশাপাশি ১০ অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে ভোট হবে।
দেশটিতে নারীর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বৈধ গর্ভপাতের সময় নির্ধারণ রয়েছে আগে থেকেই। সে সময় কমানো-বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে ব্যালটে। যেমন অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের কথা বলা যেতে পারে। সেখানে ১৫ সপ্তাহের ভ্রূণের গর্ভপাত বৈধ। তবে ধর্ষণের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। কোনো ধর্ষিত নারী যে কোনো সময় গর্ভপাত করতে পারেন। এবার ভোট হচ্ছে, বৈধ গর্ভপাত ইস্যুতে। ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো নারী গর্ভপাত করবেন কি না, সে ইস্যুতে ভোট হবে।
ফ্লোরিডার আইনটি একটু ভিন্ন। এই অঙ্গরাজ্যের আইন অনুসারে, ছয় সপ্তাহের মধ্যে একজন নারী গর্ভপাত করতে পারবেন। তবে এর আগে তাকে দুবার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে দেখাতে হবে। আর ছয় সপ্তাহের পর কেউ গর্ভপাত করতে চাইলে, এটি নিশ্চিত করতে হবে, ওই নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের ক্ষেত্রে এ সুযোগ ১৫ সপ্তাহ পর্যন্ত। অঙ্গরাজ্যের সংবিধানে এই অধিকার থাকবে, না কি আইন বদলাতে হবে—সে ইস্যুতে এবার ভোট হবে ফ্লোরিডায়।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের প্রেসিডেন্ট ভোটে গর্ভপাত ইস্যু একটি বড় প্রভাব ফেলবে। কারণ রিপাবলিকান পার্টি এই গর্ভপাতের অধিকারের ব্যাপারে যথেষ্ট নেতিবাচক। আর ডেমোক্রেটিক পার্টি আশা করছে, নাগরিকরা এখন গর্ভপাতের অধিকার চায়। তাই গর্ভপাতের পক্ষে এবং তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেবে জনগণ।