সাতক্ষীরায় বিজিবি ও পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্বর্ণের বার ছিনতাই করে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত পৌনে দশটার দিকে তালা উপজেলার ইসলামকাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যরা হলেন, সিপাহী জাহিদ হোসেন ও আলামিন এবং পুলিশ কনস্টেবল রাশেদ হোসেন। আহত জাকির হোসেন সাতক্ষীরা শহরের মিম জুয়েলার্সের একাংশের স্বত্ত্বাধিকারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত পৌনে ১০টায় পাটকেলঘাটা-তালা সড়কের ভাগবাহ এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী জাকিরকে জোর করে প্রাইভেটকারে তুলছেন বিজিবি পোশাক পরিহিত দুজন, সঙ্গে ছিলেন সাদা পোশাকে আরও দুজন।
স্থানীয় সাংবাদিক খান নাজমুল হোসাইন বলেন, রাত পৌনে দশটার দিকে তালা উপজেলার ভাগবাহ এলাকায় দেখতে পাই বিজিবির পোশাক পরা দুজন এক ব্যক্তিকে জোর করে গাড়িতে তুলছে। তখন তাদের কাছে আমি জানতে চাই ওনাকে কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? তখন উত্তরে বিজিবির পোশাক পরা ওই ব্যক্তিটা জানান একটা ইনফরমেশন আছে বলে উনাকে চেক করছি। আর ভুক্তভোগী ব্যক্তি বলছেন, আমার কাছে কিছু নেই আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে ওই ছেলেকে তারা গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, গাড়িতে তুলে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইসলামকাটি ফাঁকা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই ওই ব্যক্তিকে। জানতে পারি স্বর্ণ ব্যবসায়ী ।
সুজনসা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, এক ব্যক্তিকে গুলি করে রাস্তায় ফেলে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে পালাচ্ছে এ খবরে তালার সুজনশাহ বাজারে একটি বাইক ও প্রাইভেটকারসহ তিনজনকে আটক করে জনতা। তার মধ্যে দুজন নিজেদের বিজিবি সদস্য দাবি করেন। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ কর্মকর্তারা হাজির হয়। এ সময় জনতার হাতে আটকদের একজন তিন পিস স্বর্ণের বার তুলে দেন বিজিবি কর্মকর্তার নিকট।
আহত জাকিরের বড়ভাই শাহবাজ আলী বলেন, আমার ভাই কীভাবে ওই এলাকায় গিয়েছে আমরা জানি না। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা শহরের সিভি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বললে বিস্তারিত জানাতে পারব।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা-৩৩ বিজিবির সদর দপ্তরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
তবে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে। মামলা করলে মামলা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।