বিশ্বের সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির অনুপ্রেরণায় ইন্টার মায়ামি ইতিমধ্যেই ২০২৪ সালে সাফল্যের স্বাদ পেয়েছে। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নিয়মিত মৌসুমে শীর্ষস্থান অর্জন করে তারা সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে, তবে আসল চ্যালেঞ্জ এখনো বাকি রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য প্লে-অফ পর্বে আরও পরিশ্রম করতে হবে তাদের।
রোববার (২০ অক্টোবর) নিউ ইংল্যান্ড রেভোলিউশনের বিপক্ষে ৬-২ গোলের জয়ে মেসি তার প্রথম এমএলএস হ্যাটট্রিক করেন। সেই জয়ের ফলে ইন্টার মিয়ামি ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে যায়, যা এমএলএস ইতিহাসে কোনো দলের সর্বোচ্চ পয়েন্ট। কিন্তু আমেরিকান খেলাধুলার নিয়ম অনুযায়ী, নিয়মিত মৌসুমের শীর্ষ দল চ্যাম্পিয়ন নয়; বরং চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় প্লে-অফ জয়ের মাধ্যমে, যা এ সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে।
সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের মাধ্যমে মেসি ইন্টার মায়ামির হয়ে ইতিমধ্যেই দুটি ট্রফি জিতেছেন। এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েই তিনি লিগস কাপের শিরোপা জিতেছিলেন। তবে অনেকের মতে, এমএলএস কাপ প্লে-অফই প্রকৃত পরীক্ষার মঞ্চ।
মেসি ও তার বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেটস ও জর্দি আলবার জন্য এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষা আসন্ন সপ্তাহগুলোতে। কোচ জেরার্দো ‘টাটা’ মার্টিনোর অধীনে তারা দলকে এমএলএসের শীর্ষ শিরোপা এনে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিকে মেসি ম্যানিয়া নিয়ে কিছু সমর্থক অসন্তুষ্ট। অন্যান্য দলের সমর্থকদের মতে, মেসির জন্য অতিরিক্ত মনোযোগ দেয়া হচ্ছে ইন্টার মায়ামিকে। তবে এই প্রতিযোগিতার জন্য এটি ইতিবাচকও হতে পারে, কারণ মেসি উপস্থিত থাকার কারণে অন্য দলগুলো ইন্টার মায়ামিকে হারাতে আরো বেশি মরিয়া হয়ে উঠেছে।
অনেকের ধারণা ছিল, এমএলএসে যোগ দেওয়া মানে মেসির জন্য এক প্রকার অবসর। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আর্জেন্টিনার হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে যেমনটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন, তেমনই আন্তরিকতা নিয়ে ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন তিনি। তার নেতৃত্ব দলের জন্য শুধুই নামমাত্র নয়, বরং ৩৭ বছর বয়সেও তিনি দলে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মানসিকতা দেখিয়ে যাচ্ছেন।
কেবল বড় তারকাদের নিয়ে দল গঠন করেই ইন্টার মায়ামি সফল হয়নি। মেসি দলের তরুণ খেলোয়াড়দের সাথে সমানভাবে মিশে গিয়ে তাদের সমর্থন করেছেন। সুয়ারেজ, বুসকেটস ও আলবার সাথে তার পুরনো সম্পর্কও ইন্টার মায়ামির সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
এবারের প্লে-অফে ইন্টার মিয়ামির সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হতে পারে ইস্টার্ন কনফারেন্সের কলম্বাস ক্রু, যারা আক্রমণাত্মক ফুটবলের জন্য প্রশংসিত। এছাড়া ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষ দল লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি এবং এলএ গ্যালাক্সিও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
মেসি এই মৌসুমে মাত্র ১৯টি ম্যাচ খেললেও তিনি ২০টি গোল ও ১০টি অ্যাসিস্ট করেছেন, যা তাকে এমএলএসের এমভিপি পুরস্কারের দৌড়ে এগিয়ে রেখেছে। ইন্টার মায়ামির সাফল্যের পেছনে তার বিশাল অবদান রয়েছে। তবে তারা প্লে-অফে কেমন পারফর্ম করে, তার ওপর নির্ভর করছে দলের চূড়ান্ত সাফল্য।
শেষ পর্যন্ত মেসি ও তার বার্সেলোনা সতীর্থদের কাছে এমএলএস কাপ জয়ই হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য। তাদের নেতৃত্বে ইন্টার মায়ামি চূড়ান্ত পর্যায়ে উঠতে পারলে, এটি হবে এমএলএস ইতিহাসের অন্যতম চমকপ্রদ ফাইনাল।