মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনটি নাটকীয়তায় ভরপুর ছিল। তবে শেষপর্যন্ত দিনটি সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ঝুলিতেই গেছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দিনের খেলা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আলো-স্বল্পতার কারণে বন্ধ করা হয়। প্রোটিয়ারা প্রথম দিনের খেলা শেষ করে ১৪০ রান করে অবশ্য এ রান করতে তাদের ৬ ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে। বাংলাদেশের করা ১০৬ রানের চেয়ে ৩৪ রানে এগিয়ে প্রোটিয়ারা, হাতে রয়েছে ৪টি উইকেট।
দিনের শুরুতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণের সামনে ধুঁকতে থাকে। কাগিসো রাবাদা, উইয়ান মুল্ডার এবং কেশব মহারাজের দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণে বাংলাদেশি ব্যাটারদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোনো সুযোগই ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকার পেস এবং স্পিনের মিশ্রণে চেপে ধরে বাংলাদেশকে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের ইনিংসে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি কোনো ব্যাটারই। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন। লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররাও রান করতে ব্যর্থ হন। বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাবাদা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। রাবাদা ছাড়াও উইয়ান মুল্ডার ও কেশব মহারাজের বোলিংও বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দেয়, এই দুই বোলারও ৩টি করে উইকেট শিকার করেন।
১০৬ রানে বাংলাদেশ অলআউট হওয়ার পর, দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শুরুটা ছিল অনেকটা অস্বস্তির। বাংলাদেশের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ তার প্রথম ওভারেই প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান। তবে এরপর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া শুরু করে। যদিও তাইজুল ইসলামের স্পিন আক্রমণ তাদের বেশ বিপাকে ফেলে দেয়।
তাইজুল তার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে দুর্দান্ত কিছু ডেলিভারি বের করে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত করেন। তিনি একে একে বেডিংহ্যাম, স্টাবস এবং ব্রিটজকেকে আউট করেন। বিশেষ করে ব্রিটজকের আউট ছিল অত্যন্ত আকর্ষণীয়। বল ছেড়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায় ব্রিটজকে বোল্ড হয়ে যান। এ উইকেটের মাধ্যমে তাইজুল টেস্ট ক্রিকেটে নিজের ২০০তম উইকেট শিকার করেন, সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে এ কীর্তি গড়েন তিনি। পরে আরও ২ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারে ১৩তম বারের মতো ৫ উইকেট নেন তিনি
দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে আরও ৬ ওভার খেলা হওয়ার কথা ছিল। তবে মিরপুরের আলো-স্বল্পতা দিনের খেলার ইতি টেনে দেয়। এদিন দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ১৪০ রান সংগ্রহ করে মাঠ ছাড়ে। শেষদিকে ব্যাটিংয়ে থাকা রায়ান রিকেলটন ও প্রোটিয়াদের লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা দ্বিতীয় দিন ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে লিড বাড়ানোর চেষ্টা করবেন।
বাংলাদেশের পক্ষে হাসান মাহমুদ এবং তাইজুল ইসলাম বল হাতে সাফল্য পান। হাসান ইনিংসের শুরুতেই দারুণ একটি উইকেট এনে দেন এবং তাইজুল ৫ উইকেট শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় স্কোরের পথে এগোতে দেয়নি।