চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানান তারা।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের ‘দাবি এক দফা এক, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিলোপ’, ‘একটা একটা লীগ ধরো, ধরে ধরে জেলে ভরো’, ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ, করতে হবে করতে হবে’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, ফ্যাসিজম নো মোর’, ‘স্বৈরাচারের দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসমাইল হাসান বলেন, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছে, অসংখ্য ভাইবোনদের হত্যা করেছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো অবাধে ঘোরাফেরা করছে। তারই ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি তারা হাইকোর্টে খুনি হাসিনার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের শিক্ষার্থী ভাইবোনদের ওপর হামলা করেছে। এই সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
আরেক শিক্ষার্থী সাদমান হোসেন বলেন, যাদের রন্ধে রন্ধ্রে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, খুন তাদের এদেশের রাজনীতিতে ফিরে ফিরতে দেওয়া যাবে না। ১৫শর অধিক প্রাণের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি, সেই নতুন বাংলাদেশে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। খুব শিগগিরই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার চাই এবং এই সন্ত্রাসীদের সংগঠনের নিষিদ্ধ চাই।
ঢাবির আইন বিভাগের বিজয় নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ একটা অমানুষের সংগঠন। ছাত্রলীগ এতো গুম, খুন করার পরও তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র আফসোস নেই। জুলাই বিপ্লবের পরও ছাত্রলীগ কোন সাহসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। আমরা অতি শিগগরিই এই সন্ত্রাসী সংঘটন নিষিদ্ধ চাই। এটাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, স্বৈরাচারের সন্ত্রাসী এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী, গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তারা কোনোদিন ছাত্র-সংগঠন হতে পারে না। তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তি আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সম্রাট বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা আমাদের এই অভ্যুত্থানকে বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার রাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাবুদ্দীন চুপ্পু বলেছেন শেখ হাসিনা নাকি পদত্যাগ পত্র জমা দেয়নি। আবার তিনিই ৫ আগস্ট বলেছিলেন শেখ হাসিনা তার নিকট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এ সরকারকে অবৈধ সরকার হিসেবে আখ্যা দেওয়ার তিনি ষড়যন্ত্র করছেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আমরা বলে দিতে চাই, রাষ্ট্রপতিকে অনতিবিলম্বে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে বাংলাদেশের মাটিতে নিষিদ্ধ করতে হবে।