বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শনিবার (২ নভেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ কথা জানান।
সম্প্রতি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে ভারতের আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড। সময়মতো বকেয়া বিল না পেয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বকেয়া বিল পরিশোধ না করা হলে ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হবে বলে কয়েক সপ্তাহ আগে ঘোষণা দিয়েছিল আদানি পাওয়ার। পিডিবির সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার একটি ইউনিট উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় ঝাড়খণ্ডে আদানির এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের অপর ইউনিট বর্তমানে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে জানতে চাওয়া হলে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও আদানি পাওয়ার লিমিটেডের মধ্যকার ইস্যুতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।
তিনি বলেন, এটি একটি বেসরকারি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার চুক্তি। বিষয়টি দুই পক্ষের চুক্তির শর্তের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এই চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। সুতরাং, এ বিষয়ে জানানোর জন্য এখন আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) কাছে আদানি পাওয়ারের আট-নয় মাসের বিদ্যুৎ বিলের ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাওনা রয়েছে।
আগস্টের শেষ দিকে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ দায় পরিশোধে হস্তক্ষেপ চেয়ে অনুরোধ করেন।
২৭ আগস্ট এক চিঠিতে আদানি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি। কিন্তু ঋণদাতারা এখন আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। আমি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক পরিশোধ নিশ্চিত করতে আপনার সহায়তা কামনা করছি।’
এ ছাড়া, আদানি পাওয়ার আগস্টের শেষের দিকে পিডিবিকেও বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে পিডিবিকে জানানো হয়, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে ৩১ অক্টোবর থেকে ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হবে আদানি।