কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের আকাশে হেলিকপ্টারের চক্কর দেখা গেছে। জ্বলছে মিয়ানমানের রাখাইন। বাংলাদেশ অংশ থেকে মিয়ানমারের কয়েকটি গ্রামে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে, সেই সঙ্গে শোনা গেছে বিকট বিস্ফোরণের শব্দও।
সোমবার (৬ মে) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি ছিল বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘টানা কিছু দিন ধরে বিস্ফোরণের কোনও শব্দ শোনা না গেলেও সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার নাফ নদীর সোজা পূর্বে মিয়ানমারের ভেতর থেকে বিকট শব্দের বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। ওই এলাকায় দিনভর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে।’
মিয়ানমারের কয়েকজন বাসিন্দার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তর পাশে কাওয়ার বিল চৌকি দখলের পর আশিকাপাড়া, আরশিয়াপাড়া ও বসুয়ার এলাকায় উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার দিয়ে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। টেকনাফের চৌধুরী পাড়া এলাকা থেকে সেই ধোঁয়ার কুণ্ডলীই দেখা যাচ্ছে, বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে মাটি।’
টেকনাফের জালিয়াপাড়ার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকাল থেকে থেমে থেমে মিয়ানমারের ওপারে বিকট শব্দ শোনা গেছে। মিয়ানমারের আকাশে দেখা গেছে হেলিকপ্টারও। বোমার শব্দে দফায় দফায় কেঁপে উঠেছেন তারা। হেলিকপ্টার ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে অনেক মানুষ বিকেলে দিকে ট্রানজিট জেটিঘাটে জড়ো হন।
পৌর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, এত জোরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে যেন সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসছে বোমা।
টেকনাফ পৌরভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বোমা ও গোলার ভারী শব্দে বাংলাদেশের স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
হ্নীলা সীমান্তেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর গফুর।
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদী এলাকা এবং সীমান্ত সড়কে অন্য সময়ের তুলনায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের উত্তর মংডু টাউনশিপে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) একটি সদর দফতর আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সৈন্যরা শহরে ঢুকে পড়েছে। এসময় অন্তত ৫০ জান্তা সৈন্য আরকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। কিছু জান্তা সৈন্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।