‘তুই একটা গাধা!’ এই সম্বোধন শোনেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ কারো নির্বুদ্ধিতায় তাকে গাধা বলাটা আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসের মধ্যেই পরে। গাধা প্রাণীকে ভারতবর্ষে খুব একটা ব্যবহার করা হয় না। বিশেষ করে ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করে উপকারী প্রাণী গাধাকে সবসময় নিচু চোখেই দেখা হয়েছে।
কিন্তু আজ সেই গাধা নামক প্রাণীকেই উদযাপনের দিন- ‘বিশ্ব গাধা দিবস’! বানিয়ে বলছি? একদম না। ২০১৮ সালে প্রথম এই দিবস পালিত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরের ৮ মে সার্বজনীনভাবে পালন করা হচ্ছে বিশ্ব গাধা দিবস।
এই দিবসের শুরু করেন বিজ্ঞানী ও মরুভূমির প্রাণী গবেষক আর্ক রাজিক। তিনি একজন বিজ্ঞানী এবং মরুভূমির প্রাণী নিয়ে কাজ করেন। এক সময় তিনি বুঝতে পারেন গাধারা মানুষের জন্য যে পরিমাণ কাজ করে, সেই পরিমাণ স্বীকৃতি পাচ্ছে না। এজন্য তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেন। তারপর সেখানে গাধাবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য প্রচার করতে শুরু করেন।
‘গাধা’ শব্দটি হরহামেশাই ব্যবহার হয় মানুষের ক্ষেত্রেও। কেউ একটু বোকামি করলেই তাকে গাধার সঙ্গে তুলনা করতে ছাড়েন না অন্যরা। এমনকি যারা খুব বেশি পরিশ্রম করেন তাদের কাজকে অনেকেই বলেন গাধার খাটুনি খাটছে লোকটা। এ থেকেই বোঝা যায় এই প্রাণীটি কতটা পরিশ্রম করে মনিবের জন্য।
এই পরিশ্রমী প্রাণীটিকে তাই তো উৎসর্গ করা হয়েছে গোটা একটি দিন। এখন থেকে নিশ্চয়ই কেউ গাধা বললে আর রাগ হবে না।
গাধার দুটি প্রজাতি। উভয়ই আফ্রিকান বন্য গাধার উপপ্রজাতি এবং এগুলো হলো- সোমালি বন্য গাধা ও নুবিয়ান বন্য গাধা। ইতিহাস বলছে, ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে মানব সেবার কাজ করছে গাধা।
মানুষের প্রয়োজনে ধারাবাহিকভাবে সারা বিশ্বে গাধা ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণীটি। তারা দীর্ঘপথ ভ্রমণ করতে পারে। তারা শক্তিশালী এবং কঠোর পরিস্থিতিতেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। তাই তো এই প্রাণীটির কদর এত বেশি। যদিও কদর বলাটা খানিকটা ভুল হবে বৈকি! বলা যায় চাহিদা। তবে আজকের দিনটি প্রাণীটিকে ভালোবাসার।