ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে বিজয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ঢাকার সাদিয়া খান আদরী ওরফে সিমরান সাদিয়া (২৩) নামে এক অভিনয়শিল্পী।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে মামলা দায়েরের পর রাতে শহরের পুলিশ কোয়ার্টার এলাকার ডানহাম গলির একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযুক্ত ইকবাল হাসান বিজয় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মনোহর আলী মিয়া বাড়ির আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে বাবুলের ছেলে।
তিনি ফেনীর পূবালী সংসদ নামে একটি নাট্য সংগঠনের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি খুলনার খালিশপুরে হলেও তিনি বর্তমানে ঢাকার আফতাব নগরে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি একজন টিকটকার ও মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন।
এ বিষয়ে গত ২৯ এপ্রিল দৈনিক কালবেলায় ‘ দুই তরুণীকে নিয়ে পালালেন ছাত্রলীগ নেতা’ ও গত ৩ মে ‘স্ত্রীর স্বীকৃতি চেয়ে সেই ছাত্রলীগ নেতাকে খুঁজছে তরুণী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরে মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আশেকুর রহমানের আদালতে (সিআর-৫৫৮/২৪) বিজয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যা মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের হোসেন আহম্মদের ছেলে সুমন মিয়া (৪৫), রুহুল আমিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন রনি (২২), আহম্মদ করিমের ছেলে মাহমুদুল করিম তুহিন (২১) এবং মো. লিটনের ছেলে মাহাদী (২২)। এ মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফেনী মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন শিমুল জানান, মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফেনী মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ফেনী মডেল থানার এসআই ইমরান হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়কে সোনাগাজী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে ফেনী আদালতে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার (৮ মে) আদালতের আদেশে তাকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ এপ্রিল দুপুরের দিকে এক তরুণী তার বান্ধবীসহ ঢাকা থেকে সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে, ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বিজয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় ওই তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেন। পরে তার কথামতো ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ওই তরুণীকে বিজয়ের বাড়িতে পাঠায়। গ্রাম পুলিশ সদস্যদের ঘরের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে বিজয় ওই তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়।
মামলার বাদী সাদিয়া খান আদরী ওরফে সিমরান সাদিয়া জানান, কক্সবাজারে শুটিং করতে গিয়ে আট মাস আগে বিজয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক এবং বিজয় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফেনীতে এসে তার বোনের বাসায় বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার পরিবারসহ সবাই জানে বিজয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিজয়কে বিয়ের কথা বললে কালক্ষেপণ করতে থাকে এবং সব মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেওয়ার পর বিষয়টি সবার নজরে আনেন।