৬২ বছর বয়সে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রিচার্ড স্লেম্যান। বিশ্বে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যার শরীরে প্রথম শূকরের কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আর বাঁচলেন না।
শনিবার (১১ মে) পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর ফক্স নিউজের।
গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ চার ঘণ্টার অস্ত্রপচারের মাধ্যমে স্লেম্যানের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এরপর দুই সপ্তাহ তাকে পর্যবেক্ষণ শেষে এপ্রিলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে জানা যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের কারণে তার মৃত্যুর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
রিচার্ড স্লেম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কিডনি প্রতিস্থাপনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো কিছু আমরা খুঁজে পাচ্ছি না।
ম্যাসাচুসেটস ওয়েমাউথের বাসিন্দা রিচার্ড স্লেম্যান ট্রান্সপ্লান্ট গ্রহণের আগে বছরের পর বছর ধরে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।
মার্চে রিচার্ডের অস্ত্রপচারের পর ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল দাবি কলেছিল, অর্গান ট্রান্সপ্লানটেশন বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এটা একটা নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। একটি প্রাণির অঙ্গ অন্য প্রজাতির প্রাণির দেহে প্রতিস্থাপনের নাম হলো জিনোট্রান্সপ্লানটেশন।
ওই সময় স্লেম্যান জানিয়েছিলেন, তিনি জেনেশুনেই এই শূকরের কিডনি তার দেহে স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিলেন। কারণ, এর ফলে তার বাঁচার সুযোগ বেড়ে গেল, আর হাজার হাজার মানুষ, যাদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন জরুরি, তারাও এর ফলে উপকৃত হবেন।
বোস্টনের ওই হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাদের হাসপাতালে ১ হাজার ৪০০ জন রোগী কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করছেন।
হাসপাতালের তরফ থেকে আরও বলা হয়, যে শূকরের দেহ থেকে কিডনি নেয়া হয়েছে, তাকে আলাদা করে বড় করা হয়েছিল, যাতে তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ইনফেকশন না লাগে। এই শূকরের কিডনির সাইজ মানুষের কিডনির মতই ছিল।