রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধিনে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন মোবাশ্বিরা ইসলাম (মোহনা)। রোববার (১২ মে) এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সবাই জানতে পারলেন তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কিন্তু জিহ্বায় একটি ছোট অপারেশন মোহনাকে আর এই ফল দেখতে দিল না। তার মৃত্যুর এক মাস ২২ দিনে অনেকটা শোক কাটিয়ে উঠেছিল পরিবার। কিন্তু সেই মোহনার এতো ভালো ফলাফলের খবর শুনে বাড়িতে আবার কান্নার রোল পড়ে গেছে।
জানা গেছে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার স্কুলশিক্ষক মহিরুল ইসলামের মেয়ে মোহনা। এবছর একই উপজেলার নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষা চলাকালীন মোহনার জিহ্বার নিচে ছোট সিস্ট হয়েছিল। সেটা অপারেশন করার জন্য তাকে রাজশাহী নগরের আল আমিন নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার। গত ২০ মার্চ সন্ধ্যার আগে মোহনার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলে তিনি জ্ঞান ফিরে পান তিনি। এরপর একজন নার্স এসে একটি ইনজেকশন দিলে মোহনা ফের অচেতন হয়ে পড়েন। তার চেতনা না ফিরলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মোহনাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গত ২১ মার্চ তাকে দাফন করা হয়।
মেহনার বাবা মহিরুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েটা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছিল। কিন্তু সে তার ফলাফল দেখে যেতে পারেনি। অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার সময় মেহনা তার মাকে বলেছিল, আমি রাজশাহী কলেজেই ভর্তি হব। আমার নম্বর ১ হাজার ২০০–এর ওপরেই থাকবে। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জিহ্বার নিচে ছোট্ট একটি সিস্টের অস্ত্রোপচারে আমার মেয়েটার মৃত্যু হয়।
তার মা বিলাপ করছিলেন আর বলছিলেন, আমার মেয়ে কলেজ দেখেই গেল। নম্বরও ১ হাজার ২০০–এর বেশিই পেল। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়া হলো না।