বগুড়ায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আব্দুস ছামাদ ৫৭ বছর বয়সে জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছেন।
রোববার (১২ মে) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে তার এ সাফল্যর খবরটি জানা যায়।
জানা গেছে, নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় ১৯৮৭ সালের ১০ অক্টোবর অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই পুলিশে যোগদান করেন আব্দুস ছামাদ। পরে বিভিন্ন কারণে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়নি তার। অবশেষে চাকরির শেষ সময় এসে স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে স্বপ্ন পূরণ করেছেন পুলিশের এ সদস্য।
আব্দুস ছামাদ জানান, পাবনার ঈশ্বরদীর ট্রাফিক বিভাগ থেকে গত দুই মাস আগে বগুড়া পুলিশে যোগদান করি। ঈশ্বরদী থাকার সময় নাটোরের লালপুরের একটি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তবে পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার আগেই বগুড়ায় বদলি হয়ে যায়।
এ বিষয়ে বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থী। সারাদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিউজফিড ভরে গেছে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের আনন্দের সংবাদে। কিন্তু সব আনন্দ ছাপিয়ে জেলা পুলিশ বগুড়ার জন্য অনন্য আনন্দের উৎস ৫৭ বছর বয়সে কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ ৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ বগুড়ার ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল আব্দুস ছামাদ। ১৯৮৭ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে বাংলাদেশ পুলিশে তার যোগদান। অবসরজীবন শুরু হতে বাকি মাত্র ২ বছর ১০ মাস। ৩৭ বছরের সুদীর্ঘ চাকরি জীবনে কর্মস্থলের বাস্তবতা, শত অপ্রাপ্তি আর জীবনের নিদারুণ দুঃখগাঁথা কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, দৃঢ়প্রতিজ্ঞা, অদম্য ইচ্ছাশক্তি, নিষ্ঠার বিনিময়ে হারিয়ে গেল একনিমিষেই। জেলা পুলিশ বগুড়ার পক্ষ থেকে ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি বিজয়ী জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়াদের অনন্য অনুপ্রেরণা ট্রাফিক কনস্টেবল আব্দুস সামাদকে আন্তরিক অভিনন্দন।’