‘বছরের পর বছর ঘুরেও ডিসি অফিসের হেল্প ডেস্ক থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। কেউ আমার কথা শোনে না, উত্তর দেয় না। সেই হেল্প ডেস্ক থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। আমি রাখব না এই হেল্প ডেস্ক।’, এ কথা বলেই ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাগ থেকে লোহার রড বের করে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হেল্প ডেস্ক ভাঙচুর করেছেন শুশান্ত কুমার দাস (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ।
সোমবার (১৩ মে) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত বৃদ্ধ শুশান্ত কুমার দাস সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকার হরিহরপুর গ্রামের মৃত প্রবীর চন্দ্র দাসের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ শুশান্ত দাস জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হেল্প ডেস্ক শাখার গ্লাস ভাঙচুর করতে থাকেন। এ সময় তার মুখে শোনা গেছে হেল্প ডেস্ক থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায় না। বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। তার পরেও কোনো সমাধান নাই। আমি রাখব না এই হেল্প ডেস্ক। এমন কথা শেষ হতে না হতেই ব্যাগ থেকে লোহার রড বের করে গ্লাস ভাঙচুর করেন ওই বৃদ্ধ। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ওই বৃদ্ধের পারিবারের স্বজনরা জানান, ২০১৩ সালে থেকে শুশান্ত কুমার দাস জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচ তলায় হেল্প ডেস্ক শাখায় সহযোগিতা চান। কিন্তু আজ-কাল বলে সময় ক্ষেপণ করেন হেল্প ডেস্কের দায়িত্বরতরা। এভাবে তিনি ১১ বছর ধরে হেল্প ডেস্কের বারান্দায় ঘুরাঘুরি করছেন। রাগে ক্ষোভে এমনটা করেছেন বলে ধারণা তার পরিবারের লোকজনের। এ ছাড়া তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, আটক বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার বিস্তারিত পরে বলা যাবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি অত্যন্ত খারাপ একটি কাজ হয়েছে। অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করা হয়েছে। তবে কেন ভাঙচুর করেছেন তা এখনোই বলা যাবে না। তদন্ত করে পরে জানানো হবে।
এর আগে গত বছরের ৮ জুলাই নাসির উদ্দীন (২৫) নামে এক যুবক জেলা প্রশাসকের প্রবেশদ্বারের কেঁচিগেটের তালা ভেঙে বেলচা দিয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়ে ডিসির কক্ষসহ অফিসের ১০টি রুমের ৩১টি দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। এ সময় তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন পুলিশের এক কর্মকর্তা।
গেল ২ বছরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুবার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে যা অনাকাঙ্ক্ষিত। এমন ঘটনায় নিরাপত্তার অভাবকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।