23 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

আসামিকে না পেয়ে স্ত্রীর কপালে পিস্তল ধরল ডিবি, তদন্ত কমিটি গঠন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে আসামির স্ত্রীর কপালে পিস্তল ঠেকানোর অভিযোগ উঠেছে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার (১২ মে) জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের থলিয়ারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে সদর থানায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের মামলা হয়। এতে অভিযোগ আনা হয়, নূরুল আলম সৌদি আরব থেকে আব্দুল কুদ্দুস নামে এক ব্যক্তির স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি।

এ ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। গত শুক্রবার (৯ মে) বিকেল ৫টায় প্রবাসী নূরুল আলমকে গ্রেপ্তারের জন্য সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যান জেলা ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিমসহ আরও কয়েকজন। এ সময় নূরুল আলমের বাড়িতে তার ভাতিজার সুন্নাতে খৎনার অনুষ্ঠান চলছিল। সেসময় সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে একদল লোক নূরুল আলমকে খুঁজতে আসেন। তারা তাকে না পেয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। এ সময় অনুষ্ঠানে আসা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা নূরুল আলমের স্ত্রী, সন্তান, পিতাসহ পরিবারের লোকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে এসআই রেজাউল প্রবাসী নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যার কপালের দিকে প্রকাশ্যে পিস্তল তাক করেন।

আরো পড়ুন  ‘আজকে গেম দেওয়া হবে, বাবা-মাকে দোয়া করতে বলিস’

এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, আগামী তিন কার্যদিবসে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কোনো অফিসার যদি আসামি ধরতে গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরো পড়ুন  তিতাস গ্যাসের অফিস সহায়কের ৩ স্ত্রী কারাগারে

এ ব্যাপারে নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বলেন, প্রবাসে আব্দুল কুদ্দুসকে ব্যবসায়িক অংশীদার না করায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার দিন আমাদের বাড়িতে সুন্নাতে খৎনার অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় ৫/৬ জন সাদা পোশাকে এসে ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের কাছ থেকে আলমারির চাবি নেয়। এ সময় তারা তল্লাশি করে কিছু পায়নি। কিন্তু আমাদের ঘরে থাকা প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি দেখে চিৎকার করায় শিশু নিশাতের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। প্রতিবাদ করায় তারা আমার কপালে পিস্তল ঠেকায় এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, বাদীপক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়িতে চিল্লা-পাল্লা শুনছিলাম। আমি যাওয়ার পর তারা খারাপ আচরণ করে। আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। আমার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারো দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা, সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি। সদর উপজেলার বিশ্বরোড এলাকায় বাদী এসে বাড়িতে আসামির অবস্থানের কথা জানালে সেখানে যাই।

আরো পড়ুন  সারি সারি কবর, একসঙ্গে গ্রামের ৭ জনের মৃত্যুতে মাতম

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। যারা প্রবাসীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্ত শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দেব।

সর্বশেষ সংবাদ