সুমন কান্তি নাথের জীবনটা আর দশজনের মতো নয়। ছয় মাস বয়সে মাকে হারিয়েছেন। এরপর সৎ মা চঞ্চলার কাছে বড় হওয়া সুমন বাবাকেও হারান ১৪ বছর বয়সে। একদিকে সংসারের অভাব-অনটন, অন্যদিকে নিজেকে শিশুর মতো দেখার সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছেন। খর্বাকৃতির কারণে চাইলেও কেউ তাকে কোনো কাজে নেয় না।
অস্বাভাবিক আকৃতির হলেও পরিবারের কেউ সুমনকে অবহেলা করেন না। সৎ মা চঞ্চলাও তাকে ভালো রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তারা সবাই চান, সুমন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। অন্য দশজনের মতো বেড়ে উঠুক হাসি-খুশিতে। কিন্তু অভাবের সংসারে সুমনকে ভালো ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য তাদের নেই।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হাজিশ্বরাই গ্রামের বাসিন্দা সুমন কান্তি নাথ। দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুরেফিরে একা একাই কাটিয়ে দেন। ক্যামেরার সামনেও কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না তিনি।
সুমন কান্তি নাথ বলেন, আমি হাঁটা-চলা করি, মাঠে যাই, খেলাধুলা করি। আমি অ্যাজমা রোগেও আক্রান্ত। এসব নিয়ে আমার খারাপ লাগে।
বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শরীর না বাড়ার যে রোগ—যথাসময়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে সেটার নিরাময় সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তবে সুমন কান্তি নাথের সমস্যাটার ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে চাননি চিকিৎসকরা।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আসিফ হায়দার বলেন, ওনার রোগটির নাম খর্বাকৃতি (Dwarfism)। এ রোগের অনেকগুলো কারণ আছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর অন্যতম কারণ পুষ্টিহীনতা। এর কারণে অনেক সময় এ সমস্যা হতে পারে। এ জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেই অনুযায়ী পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক করতে হবে।
সুমন কান্তি নাথকে এখনো যদি উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো তিনি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। তাই এ ব্যাপারে বিত্তবানদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।