গাজায় আট মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তবে দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ হামলায় একের পর এক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে ইসরায়েলি সেনারা। এমনকি নিজেদের গুলিতেও নিজেরা নিহতের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মোসাদের সাবেক উপপ্রধান রাম-বেন বারাক।
শনিবার (১৮ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলে পার্লামেন্ট নেসেট সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক উপপ্রধান রাম বেন বারাক বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ নিরর্থক। শেষ দিকে এসে এখন ইসরায়েল হেরে যাচ্ছে। এমনকি তারা অর্থনৈতিক পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি পাবলিক রেডিওকে তিনি বলেন, ইসরায়েলের এ যুদ্ধে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের অভাব রয়েছে। এটা স্পষ্ট যে আমরা এ অভিযানের নির্দিষ্ট লক্ষ্য হারিয়ে ফেলেছি।
মোসাদের সাবেক উপপ্রধান বলেন, আমাদের একই এলাকায় জোরপূর্বক যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং শেষে এসব জায়গায় আমাদের সেনা হারাতে হচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের অর্থনীতিরও অবনতি হচ্ছে এবং কোথাও আমরা সফল হতে পারছি না।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায় সম্প্রতি ইসরায়েলি সরকারকে একটি চিঠি লিখেছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ওই চিঠিটে বলা হয়েছে, গাজায় যেন আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে ইসরায়েল। আর মানবিক সহায়তা নিশ্চিতেও ইসরায়েলি সরকারকে চাপ দিয়েছে বিশ্বের শক্তিশালী এসব দেশ। তাই মনে করা হচ্ছে, এবার ভালোই চাপে পড়বেন নেতানিয়াহু।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফোরাম, গ্রুপ সেভেনের সদস্য দেশ- কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য ওই চিঠিতে সই করেছে। তবে পিঠ টান দিয়েছে গ্রুপের অন্যতম সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ সেভেনের বাইরেও অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড চিঠিতে সই করেছে। এসব দেশের অধিকাংশের কাছ থেকেই অস্ত্র আমদানি করে ইসরায়েল।
চিঠিতে ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা জানায়, নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে গেলেও দেশটিকে পুরোপুরিভাবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতর ঢুকে হামাসের হামলার ঘটনার পর একই মাসের শেষদিকে নেতানিয়াহু প্রশাসন পাল্টা পদক্ষেপ নেয়, তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাফায় পূর্ণমাত্রার অভিযানের বিরোধী। একই সঙ্গে গাজার জনগোষ্ঠীর কাছে যেন ত্রাণ পৌঁছে সেটাও নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে তারা। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, তারা গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে না। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এর ভিন্ন চিত্রই দেখা মিলছে।