গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন চেন কুগেল নামের এক চিকিৎসক। সিনওয়ারের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে এবং তার দেহে কী কী ক্ষত ছিল সে ব্যাপারে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।
এই চিকিৎসকের দাবি, সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছে গুলির আঘাতে। যেটি তার মাথায় করা হয়েছিল। যা নতুন ও চমকপ্রদ তথ্য। এর আগে ইসরায়েল জানিয়েছিল, সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছে ট্যাংকের গোলার আঘাতে। অবশ্য সিনওয়ারের দেহে ট্যাংকের গোলার আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে।
চিকিৎসক চেন কুগেল বলেন, তার মৃত্যুর কারণ- মাথায় গুলি লাগা। তার মাথায় একটি গুলি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার মস্তিস্কে আঘাতজনিত ক্ষত ছিল। সিনওয়ারের দেহে অন্যান্য আঘাতও ছিল, যেমন ডান বাহুতে মিসাইলের আঘাত, বাম পা বা উরুতে ভবন ধসে পড়ার আঘাত, এবং তার দেহে প্রবেশ করা অসংখ্য শার্পনেল। যদিও সবগুলো শার্পনেল তার বুকে ছিল। এসব শার্পনেল তার দেহে ব্যাপক ক্ষতি করে। কিন্তু তার মৃত্যুর কারণ হলো মাথার গুলির আঘাত।
সিএনএন এই চিকিৎসককে প্রশ্ন করেছিল কোন সময় সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছিল বলে ধারণা করছেন। জবাবে তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে হয়ত তিনি নিহত হয়ে থাকতে পারেন। এর ২৪ ঘণ্টা পর তার মরদেহ ইসরায়েলের তেলআবিবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়া যায় মরদেহটি ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছিল।
এদিকে সিনওয়ারের মাথায় গুলির আঘাত থাকার ব্যাপারে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সিএনএন। জবাবে তারা বলেছে, সিনওয়ার যে বাড়িতে ছিলেন সেটিতে ট্যাংক থেকে গোলা ছোড়ার আগে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল।
ইসরায়েলের চরম আতঙ্ক ছিলেন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। বলা হয়ে থাকে তার পরিকল্পনাতেই ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে ধসিয়ে দিয়ে চালানো হয় ৭ অক্টোবরের সেই অপারেশন আকসা ফ্লাড।
গেল বুধবার গাজার রাফাহ অঞ্চলের তেল সুলতান এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে এক অসম যুদ্ধে বীরের মতোই লড়ে প্রাণ হারান সিনওয়ার। মৃত্যুর আগ মূহুর্তেও ইসরায়েলি ড্রোন লক্ষ্য করে যিনি এভাবে ছুড়েছিলেন হাতের লাঠি। বুঝিয়েছিলেন, হত্যা করেও থামানো যাবে না স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা।
সিনওয়ারকে হত্যার পর পরিচয় শনাক্তের জন্য পরের দিন বৃহস্পতিবার গোপনে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলে। সেখানে দফায় দফায় চালানো হয় পরীক্ষা। জানা যায়- এটিই হামাস প্রধানের মরদেহ।
ইসরায়েলি দুটি সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছে, এখন সিনওয়ারের মরদেহকে কাজে লাগিয়ে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে নেতানিয়াহু প্রশাসন।